ভারতের মর্যাদাপূর্ণ রাষ্ট্রীয় বেসামরিক সম্মাননা ‘পদ্মশ্রী’-তে ভূষিত হলেন বাংলাদেশের বরেণ্য রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা।
বৃহস্পতিবার (২৫ জানুয়ারি) ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক প্রেস নোটে এবার পদ্ম পুরস্কারের জন্য মনোনীতদের নাম প্রকাশ করেছে।
চলতি বছর মোট ১৩২ জনকে পদ্ম পুরস্কারের জন্য মনোনীত করা হয়েছে। তাদের মধ্যে পাঁচ জন পেয়েছেন ‘পদ্মবিভূষণ’, ১৭ জন পেয়েছেন ‘পদ্মভূষণ’, ১১০ জন পেয়েছেন ‘পদ্মশ্রী’। পদক পেতে যাওয়া বিশিষ্টজনদের মধ্যে ৮ জন হচ্ছেন বিদেশি, বাকিরা ভারতীয়। পশ্চিম বঙ্গের অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তী ও সঙ্গীত শিল্পী ঊষা উথুপসহ ১১ জন রয়েছেন।
ভারতের প্রজাতন্ত্র দিবস সামনে রেখে প্রতি বছর পদকপ্রাপ্তদের নাম ঘোষণা করা হয়। সাধারণত মার্চ বা এপ্রিলে রাষ্ট্রপতি ভবনে অনুষ্ঠান করে পুরস্কারগুলো তুলে দেওয়া হয়।
শিল্প, সমাজকর্ম, বিজ্ঞান ও প্রকৌশল, বাণিজ্য ও শিল্প, জনসেবা, চিকিৎসা, সাহিত্য ও শিক্ষা, ক্রীড়া এবং নাগরিক পরিষেবায় অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে পদ্ম পদক দেওয়া হয়। পদ্ম পুরস্কার তিন বিভাগে দেওয়া হয়; ‘পদ্মবিভূষণ’, ‘পদ্মভূষণ’ এবং ‘পদ্মশ্রী’।
‘পদ্মবিভূষণ’ ব্যতিক্রমী এবং বিশেষ সেবার জন্য দেওয়া হয়। উচ্চমানের বিশিষ্ট সেবার জন্য দেওয় হয় ‘পদ্মভূষণ’। যেকোনো ক্ষেত্রে বিশেষ সেবার জন্য দেওয়া হয় ‘পদ্মশ্রী’।
শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যার জন্ম ১৯৫৭ সালের ১৩ জানুয়ারি রংপুর জেলা। বন্যা প্রথমে ছায়ানট এবং পরে ভারতের পশ্চিম বঙ্গের বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে সংগীত শিক্ষা ও পড়ালেখা করেছেন। পশ্চিম বঙ্গে শান্তিদেব ঘোষ, কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, নীলিমা সেন ও আশীষ বন্দ্যোপাধায়ের মত সংগীতজ্ঞদের সান্নিধ্যে আসেন তিনি।
সংগীত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ‘সুরের ধারার’ প্রতিষ্ঠাতা বন্যা রবীন্দ্র সংগীত নিয়ে কয়েকটি বইও লিখেছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা ও সংগীত বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও নৃত্যকলা বিভাগের চেয়ারপারসন হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন।
সংগীতে অবদানের জন্য ২০১৬ সালে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার স্বাধীনতা পুরস্কার পান বন্যা। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের ‘বঙ্গভূষণ’, ফিরোজা বেগম স্মৃতি স্বর্ণপদকসহ বিভিন্ন সম্মাননায় ভূষিত এ শিল্পী।
এর আগেও ভারতের রাষ্ট্রীয় পুরস্কার পেয়েছেন বেশ কয়েকজন বাংলাদেশি। ২০২০ সালে সাবেক কূটনীতিক মোয়াজ্জেম আলী ও প্রত্নতত্ত্ববিদ এনামুল হক ‘পদ্মশ্রী’ পান।
২০২১ সালে ‘পদ্মশ্রী’ খেতাব পান রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী, লেখক, গবেষক, সংগঠক ও শিক্ষক সনজীদা খাতুন ও বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী সাজ্জাদ আলী জহির বীরপ্রতীক।
২০১৪ সালে অধ্যাপক আনিসুজ্জামান পদ্মভূষণ এবং তার আগের বছর সমাজকর্মী ঝর্ণাধারা চৌধুরী পদ্মশ্রী খেতাব লাভ করেন।