সীমান্তের কাঁটাতারের বেড়া ভেঙে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলায় প্রবেশ করা দুই হাতিকে মঙ্গলবার ফেরত পাঠানো হয়েছে ভারতে।
ভারতীয় বন বিভাগের হাতি উদ্ধার বিশেষজ্ঞ দলের সহযোগিতায় উভয় দেশের সমন্বিত উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনার একপর্যায়ে রাত ৯টার দিকে প্রাণী দুটিকে স্বদেশে ফেরানো হয়।
বাংলাবান্ধা সীমান্তের ৪৪৮ নম্বর পিলার বরাবর কাঁটাতারের বেড়া ভেঙে ভারতের ফাসিদেয়া বিএসএফ ক্যাম্প সংলগ্ন এলাকায় হাতি দুটিকে পাঠান দুই দেশের সংশ্লিষ্টরা।
এর আগে মঙ্গলবার ভোরে দুটি বন্যহাতি ভারতীয় সীমান্তের কাঁটাতারের বেড়া ভেঙে ৭৩৫ পিলার বরাবর তেঁতুলিয়া উপজেলার শালবাহান ইউনিয়নের ইসলামবাগ এলাকা দিয়ে অনুপ্রবেশ করে।
প্রাণী দুটি তিরনইহাট ইউনিয়ন হয়ে সকাল আটটার দিকে বাংলাবান্ধা ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী দক্ষিণ কাশিমগঞ্জ এলাকায় মহানন্দা নদী সংলগ্ন একটি ভুট্টা ক্ষেতে অবস্থান নেয়।
খবর পেয়ে উপজেলা প্রশাসনের সার্বিক সমন্বয়ে তেঁতুলিয়া মডেল থানা পুলিশ, ট্যুরিস্ট পুলিশ, বন বিভাগ, ফায়ার সার্ভিস ও উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস স্থানীয় জনসাধারণকে নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে নেয়াসহ উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনার উদ্যোগ নেয়।
অন্যদিকে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের মাধ্যমে ভারতীয় বন বিভাগকে বার্তা পাঠায়। সেই বার্তার ভিত্তিতে বিকেল তিনটার দিকে মেইন পিলার ৭৩০-এ বিএসএফ ও বিজিবির মধ্যে পতাকা বৈঠক হয়।
পতাকা বৈঠকে বিজিবি-বিএসএফ কর্মকর্তাদের পাশাপাশি তেঁতুলিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উভয় দেশের বন বিভাগের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে ভারতীয় বন বিভাগের হাতি উদ্ধার বিশেষজ্ঞ দল সীমানা পেরিয়ে বাংলাদেশে এসে প্রাণী দুটিকে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়ার অনুমোদন চায়। বিষয়টি পঞ্চগড় জেলা প্রশাসক জ্যেষ্ঠ কর্তৃপক্ষকে জানালে ‘বাংলাদেশ ভারত আন্তসীমান্ত হাতি সংরক্ষণ প্রটোকল ২০২০’ অনুযায়ী স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের নির্দেশনা অনুযায়ী অনুপ্রবেশকৃত হাতি দুটি ভারতে ফেরত পাঠানোর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়।
এদিকে উদ্ধার কার্যক্রমের একপর্যায়ে হাতি দুটি আকস্মিক ভুট্টা ক্ষেত থেকে বের হয়ে নিরাপত্তা বলয় ভেঙে স্থানীয় শারীরিক প্রতিবন্ধী যুবক মো. নুরুজ্জামানকে গুরুতর আহত করে। ওই যুবককে হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসাকালে তার মৃত্যু হয়।
তেঁতুলিয়া উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রাণ হারানো যুবকের পরিবারকে অর্থ সহায়তা দেয়া হয়েছে।