Saturday, April 19, 2025

সর্বশেষ

বরিশালের হাতে বিপিএলের প্রথম শিরোপা

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) তিনবার ফাইনাল খেলেও শিরোপা জেতা হয়নি ফরচুন বরিশালের। অবশেষে তামিম ইকবালের হাত ধরে চতুর্থবারের প্রচেষ্টায় অধরা শিরোপা ঘরে তুলল দলটি। চলতি আসরের শিরোপা নির্ধারণী ফাইনালে টুর্নামেন্টের সবচেয়ে সফলতম দল ও ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে দক্ষিণাঞ্চলের ফ্র্যাঞ্চাইজিটি।

আজ শুক্রবার (১ মার্চ) মিরপুর শের-ই বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বিপিএলের দশম আসরের শিরোপা নির্ধারণী ফাইনাল ম্যাচে আগে ব্যাট করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১৫৪ রান করেছিল লিটন দাসের দল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। জবাব দিতে নেমে ওপেনিংয়ে তামিম-মিরাজের জুটির পর মায়ার্সের ঝোড়ো ব্যাটিংয়ে ১৯ ওভারে ৬ উইকেট হাতে রেখেই লক্ষ্যে পৌছে যায় বরিশাল।

১৫৫ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে তামিম ইকবাল ও মেহেদী হাসান মিরাজের ব্যাটে উড়ন্ত সূচনা পায় বরিশাল। শুরু থেকেই কুমিল্লার বোলারদের মেরে খেলতে থাকেন তারা। দুজনের উদ্বোধনী জুটি ভাঙে দলীয় ৭৬ রানে। এ সময় মঈন আলির বলে বোল্ড হয়ে মাঠ ছাড়েন তামিম। বিদায়ের আগে ২৬ বলে সমান ৩টি করে চার-ছক্কায় ৩৯ রান করেন ড্যাশিং ওপেনার। এরপর মিরাজও শিকারে পরিণত হন মঈন আলির। মিরাজ ২৬ বলে করেন ২৯ রান।

দ্রুত ২ উইকেট চলে যাওয়ার পর কাইল মায়ার্স ও মুশফিকুর রহিমের ব্যাটে এগোতে থাকে বরিশালের রানের চাকা। এরমধ্যে মায়ার্স দুবার জীবন পান। মঈন আলির ওভারে একবার রিশাদ হোসেন, আরেকবার জনসন চার্লজ তার ক্যাচ ছাড়েন। জীবন পেয়ে জয়ের খুব কাছে চলে গেলেও মায়ার্স বরিশালকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়তে পারেননি। ব্যক্তিগত ৪৬ রানে তিনি শিকার হন মুস্তাফিজুর রহমানের। মুশফিকুর রহিমও ফিজের বলে ক্যাচ তুলে বিদায় নেন, ১৮ বলে তিনি করেন ১৩ রান। বাকি কাজটা শেষ করেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও ডেভিড মিলার। মিলার ৮ ও রিয়াদ করেন ৭ রান।

এর আগে টস জিতে কুমিল্লাকে প্রথমে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানিয়েছিল বরিশালের অধিনায়ক তামিম ইকবাল। ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই কাইল মায়ার্সকে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে দারুণ শুরুর ইঙ্গিত দিয়েছিলেন সুনীল নারাইন। তবে পঞ্চম বলেই আরেক স্বদেশি ওবেড ম্যাকয়ের হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরের পথ ধরেন এই ক্যারিবীয় তারকা। বিদায়ের আগে ৪ বলে ৫ রান করেন বাঁহাতি এই ব্যাটার।

এরপর পাওয়ার প্লেতে আরও দুই উইকেট হারিয়ে বিপর্যয়ে পড়ে যায় কুমিল্লা। চতুর্থ ওভারে জেমস ফুলারের বলে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তাওহিদ হৃদয়। তার ১০ বলে ১৫ রানের ইনিংসে ছিল ৩টি চারের মার। এরপর ষষ্ঠ ওভারে ফুলারের বলে ফের রিয়াদের হাতে ক্যাচ দিয়ে বসেন লিটন দাস। কুমিল্লার অধিনায়ক সাজঘরে ফেরার আগে ১২ বলে ৩ বাউন্ডারিতে করেন ১৬ রান।

দশম ওভারে জনশন চার্লসকে প্যাভিলিয়নের পথ দেখান ওবেড ম্যাকয়। সাজঘরে ফেরার আগে ১৭ বলে ২ ছক্কায় ১৫ রান করেন এই ক্যারিবীয় ব্যাটার। দলের যখন দুরাবস্থা, ঠিক তখন রানআউটে কাঁটা পড়েন মঈন আলীও। মেহেদি হাসান মিরাজের সরাসরি থ্রোয়ে ব্যক্তিগত ৩ রানেই থেমে যায় এই ইংলিশম্যানের ইনিংস। ফলে দলীয় ৭৯ রানে টপ অর্ডারের ৫ ব্যাটারকে হারিয়ে অল্পতেই গুঁটিয়ে যাওয়ার শঙ্কায় পড়ে কুমিল্লা।

সেই সময়ে দলের ত্রাণকর্তা হয়ে একপ্রান্ত আগলে ধরে রাখেন মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন। ষষ্ঠ উইকেটে জাকের আলি অনিককে নিয়ে ৩৬ রানের জুটি গড়ে দলকে এগিয়ে নিয়ে যান উইকেটকিপার এই ব্যাটার। তবে ১৭তম ওভারে মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের বলে বোল্ড হয়ে যান অঙ্কন। বিদায়ের আগে ডানহাতি এই ব্যাটারের ব্যাট থেকে আসে দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩৮ রান।

শেষদিকে ব্যাট হাতে ঝড় তোলেন আন্দ্রে রাসেল। এই ক্যারবিয়ান হার্ডহিটার ১৪ বলে করেন অপরাজিত ২৭ রান। যার মধ্যে ছিল ৪টি বিশাল ছক্কার মার। অপর অপরাজিত ব্যাটার জাকের আলি ২৩ বলে ২০ রানের কার্যকরী ইনিংস খেললেও কুমিল্লার জন্য তা যথেষ্ঠ ছিল না।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স: ২০ ওভারে ১৫৪/৬ (সুনীল নারিন ৫, লিটন দাস ১৬, তাওহীদ হৃদয় ১৫, জনসন চার্লস ১৫, মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন ৩৮, মঈন আলী ৩, জাকের আলী অনিক ২০*, আন্দ্রে রাসেল ২৭*; মায়ার্স ৪-০-২৫-১, সাইফ ৪-০-৩৭-১, ফুলার ৪-০-৪৪-২, তাইজুল ৪-০-২০-০, ম্যাককয় ৪-০-২৪-১)।

ফরচুন বরিশাল: ১৯ ওভারে ১৫৭/৪ (তামিম ইকবাল ৩৯, মেহেদি হাসান মিরাজ ২৮, কাইল মায়ার্স ৪৬, মুশফিকুর রহিম ১৩, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ৭*, ডেভিড মিলার ৮*; তানভীর ৩-০-২৪-০, বর্ষণ ১-০-১৫-০, নারাইন ৪-০-২১-০, মোস্তাফিজ ৪-০-৩১-২, মঈন ৪-০-২৮-২, রাসেল ৩-০-৩৩-০)।

ফল: ফরচুন বরিশাল ৬ উইকেটে জয়ী।

সর্বশেষ

নির্বাচিত

Stay in touch

To be updated with all the latest news, offers and special announcements.