ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থী ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকার আত্মহত্যার ঘটনায় অভিযোগ ওঠা সহপাঠী রায়হান সিদ্দিকি আম্মানকে সাময়িক বহিষ্কার ও দ্রুত গ্রেপ্তারের নির্দেশনা দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
শনিবার (১৬ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. আইনুল ইসলাম প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, তার সই করা এ সংক্রান্ত পৃথক দুইটি বিজ্ঞপ্তিও প্রকাশিত হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, আইন বিভাগের ২০১৮-২০১৯ শিক্ষাবর্ষের (১৪তম ব্যাচের) অভিযুক্ত শিক্ষার্থী রায়হান সিদ্দিকি আম্মানকে সাময়িক বহিষ্কার ও দ্রুত গ্রেপ্তারের নির্দেশ এবং অভিযুক্ত শিক্ষার্থীকে সহায়তাকারী ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক দ্বীন ইসলামকে সাময়িক বরখাস্ত ও প্রক্টরিয়াল বডি থেকে তাৎক্ষণিক অব্যাহতি প্রদান করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
এ ছাড়া জবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. জাকির হোসেনকে আহ্বায়ক করে ৫ সদস্যবিশিষ্ট উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে উপাচার্যের কাছে তদন্ত রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে।
এর আগে শুক্রবার রাত ১০টার দিকে জবির আইন বিভাগের ১৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ফাইরুজ অবন্তিকা ফেসবুকে শিক্ষক ও সহপাঠীকে দায়ী করে পোস্ট দেন। এর কিছুক্ষণ পরই কুমিল্লার নিজ বাড়িতে গলায় ফাঁস নেন ওই ছাত্রী। আত্মীয় ও পরিবারের সদস্যরা তাকে উদ্ধার করে কুমিল্লা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। ওই শিক্ষার্থীর পোস্ট করা সুইসাইড নোটে সহপাঠী আম্মান সিদ্দিকীর বিরুদ্ধে হয়রানি, হুমকিসহ নানা অভিযোগ তুলেছেন। আর সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলামের বিরুদ্ধে অফিসে ডেকে নিয়ে হয়রানি ও মানহানির অভিযোগ তুলেছেন। তা ছাড়া ‘সেক্সুয়ালি অ্যাবিউজিভ কমেন্ট’ করার অভিযোগ তুলেছেন ওই ছাত্রী।
এ ঘটনার পরপরই বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে পড়ে বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীরা। ক্যাম্পাসে আগুন জ্বালিয়ে ভোর রাত পর্যন্ত বিক্ষোভ সমাবেশ করে তারা। পরে রাত দেড়টার দিকে উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম ক্যাম্পাসে এসে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের। উপাচার্যের আশ্বাসের পরও শিক্ষার্থীরা আন্দোলন থামাননি। পরে ভোরে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাস ছাড়লেও শনিবার বেলা ৩টায় বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দিয়েছেন তারা।