Thursday, December 5, 2024

সর্বশেষ

স্পটিফাইয়ে বাংলাদেশের ‘টপ আর্টিস্ট’ চট্টগ্রামের তানভীর ইভান

তরুণেরা তানভীর ইভান শোনেন। কেন শোনেন? এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে ইভানের বেশ কয়েকজন অনুরাগীর সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। বেশির ভাগ অনুরাগী জানান, ইভানের গানে প্রেম-ভালোবাসা ও বিরহ থাকে। সবচেয়ে বেশি টানে গানের কথা। কথার মধ্যে নিজেদের জীবনকে খুঁজে পান তাঁরা। পাশাপাশি ইভানের সুর ও গায়কির প্রতিও মুগ্ধতার কথা বলেছেন কেউ কেউ।

ইভান কতটা জনপ্রিয়? এর হিসাবও দিয়েছে স্পটিফাই। এ বছর স্পটিফাইয়ে বাংলাদেশি শিল্পীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশিবার ইভানকে শুনেছেন শ্রোতারা। ১৮০ দেশের ৯৬ লাখ শ্রোতা তাঁকে শুনেছেন; ইভানের গান প্রায় ৬ কোটি বার শোনা হয়েছে। কয়েক বছর ধরে স্পটিফাইয়ে বাংলাদেশি শিল্পীর গানের তালিকার শীর্ষে ছিলেন ইভান। এবার তাঁকে ‘টপ আর্টিস্ট’ হিসেবে স্বীকৃতি দিল বৈশ্বিক প্ল্যাটফর্মটি।

এখনো ২৬ বছর পেরোননি ইভান। এর মধ্যেই হিন্দি গান ‘ম্যায়নে রোয়া’, ‘অভিযোগ’, ‘অভিমান’-এর মতো গান দিয়ে লাখো তরুণ শ্রোতার হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছেন। হৃদয়ের গভীর থেকে দরদ দিয়ে গেয়েছেন ‘বাবা তুমি আমার বেঁচে থাকার কারণ’, গানটি ৯ থেকে ৯০—সবাইকে আবেগতাড়িত করেছে। বাবার অনুপ্রেরণায় সংগীতে এসেছেন ইভান। সংগীতে আতিফ আসলামকে আদর্শ মানেন ইভান, তাঁকে শুনেই সংগীতশিল্পী হওয়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন তিনি।

চট্টগ্রামের ক্যান্টনমেন্ট ইংলিশ স্কুল অ্যান্ড কলেজে পড়াকালে ২০১৩ সালে নিজের লেখা ও সুরে হিন্দি গান ‘ম্যায়নে রোয়া’ প্রকাশ করেন ইভান; হিন্দি গান দিয়েই সংগীতশিল্পী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। প্রকাশের বছর পাঁচেক পর গানটি বাংলাদেশের গণ্ডি পেরিয়ে ভারত ও শ্রীলঙ্কায় ‘ভাইরাল’ হয়।

গত এক দশকে ২০টির মতো গান প্রকাশ করেছেন। এর মধ্যে ‘অভিযোগ’, ‘অভিমান’, ‘ছেড়ে যেয়ো না’, ‘অজানায়’, ‘আয়না’, ‘প্রায়শ্চিত্ত’-কে নিজের ‘সিগনেচার’ স্টাইলের গান বলছেন ইভান। এর মধ্যে ২০২০ সালে প্রকাশিত বেস্টফ্রেন্ড ৩ নাটকের ‘অভিমান’ গানের জন্য ‘মেরিল–প্রথম আলো পুরস্কার’ পেয়েছেন ইভান। তাঁর ভাষ্যে, ‘প্রত্যেক আর্টিস্টেরই সিগনেচার স্টাইল থাকে। এই গানগুলো আমার সিগনেচার স্টাইলের গান। এগুলোর জন্য শ্রোতারা আমাকে চিনেছে।’

এই ডিসেম্বরে ‘সিগনেচার’ স্টাইলের শেষ গান ‘পারবে না’ প্রকাশ করবেন ইভান। এরপর ভিন্ন ধরনের গানে পাওয়া যাবে তাঁকে। এ বছর মুক্তির অপেক্ষায় থাকা নির্মাতা প্রবীর রায় চৌধুরীর একটি টেলিফিল্মেও ইভানের একটি গান থাকছে।

একলা চলো রে

সচরাচর সংগীত প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে গান করতে দেখা যায় শিল্পীদের। তবে ইভান ওই পথ না মাড়িয়ে স্বাধীনভাবে গান করে যাচ্ছেন। সংগীত প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের কাছে ধরনা না দিয়ে এককভাবে গান করছেন। গত এক দশকে বেশির ভাগ গানই স্পটিফাই ও ইউটিউবে নিজের চ্যানেলে প্রকাশ করেছেন।

গতকাল শনিবার প্রথম আলোকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বললেন, ‘নিজে নিজে গান করেছি, পরিবার ছাড়া আমার সামনে-পেছনে কেউ ছিল না। আমি এখনো একজন স্বাধীন শিল্পী। এককভাবে গান করছি, এভাবেই গান করে যেতে চাই।’

নিজে নিজে গান করেছি, পরিবার ছাড়া আমার সামনে-পেছনে কেউ ছিল না। আমি এখনো একজন স্বাধীন শিল্পী। এককভাবে গান করছি, এভাবেই গান করে যেতে চাই।

২০১৩ সাল থেকে ইউটিউবে ও ২০১৬ সাল থেকে স্পটিফাইয়ে গান প্রকাশ করছেন তিনি। ইভানের জন্ম, বেড়ে ওঠা ও পড়াশোনা চট্টগ্রামে। থাকেন বন্দরনগরীর খুলশীতে। বাসায় নিজের স্টুডিওতে গান করেন। গত বছরের শেষভাগে ঢাকার উত্তরায় আরেকটি স্টুডিও করেছেন। মাঝেমধ্যে ঢাকায় এলেও ঢাকানির্ভর সংগীত ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে ইভানের যোগ নেই বললেই চলে।

তানভীর ইভানদের মতো শিল্পীদের দেখে হালের তরুণদের অনেকে স্বাধীনভাবে গানে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। তাঁদের কী পরামর্শ দেবেন? ইভান বললেন, ‘বাইরের দশটা মানুষের কথা না শুনে, নিজের মনের কথা শুনে এগিয়ে যেতে হবে। এই সময়ে অনেকে ভালো কাজ করছেন, তবে গান প্রকাশের সাহস পান না। আমি বলব, গান প্রকাশ করো।’

স্পটিফাই ও ইউটিউবে গান প্রকাশ করে পরিচিতি পাওয়ার পর এখন ইভানকে খুঁজে নিচ্ছেন নাটকের নির্মাতারা।

সর্বশেষ

নির্বাচিত

Stay in touch

To be updated with all the latest news, offers and special announcements.