‘প্রত্যয় স্কিম’ সংক্রান্ত অর্থ মন্ত্রণালয়ের জারিকৃত প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহারসহ আরও দুই দাবিতে সর্বাত্মক কর্মবিরতির প্রথম দিন সোমবার পার করছেন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষকরা।
কর্মসূচির শুরুর দিনে সকাল ১০টা থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষকরা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবনের ফটকের ভেতরে অবস্থান নেন।
এর আগে ঢাবির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কর্মসূচি থাকলেও পূর্বের ঘোষণা অনুযায়ী সেখানে অংশ নেননি শিক্ষক সমিতির অধিকাংশ সদস্য, তবে কয়েকজন সদস্যের উপস্থিতি লক্ষ করা গেছে।
এর আগে রোববার বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক ফেডারেশনের সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. আখতারুল ইসলাম এবং মহাসচিব অধ্যাপক ড. মো. নিজামুল হক ভূঁইয়া স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে সর্বাত্মক কর্মবিরতির কথা জানানো হয়।
প্রত্যয় স্কিম প্রত্যাহার ছাড়া শিক্ষকদের আরও দুইটি দাবি রয়েছে। সেগুলো হলো শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতন স্কেল প্রবর্তন এবং প্রতিশ্রুত সুপার গ্রেডে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্তি। এসব দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এ সর্বাত্মক কর্মবিরতি চলবে হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষক নেতারা।
আজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী হওয়ার সুবাদে প্রতিষ্ঠানটিতে ছুটি চলছে। ফলে শিক্ষকদের এ কর্মবিরতির প্রভাব তেমন লক্ষ করা যায়নি, তবে মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয় খোলার দিন। সেদিনই এটির প্রভাব বিশেষভাবে লক্ষ করা যাবে।
ঢাবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. নিজামুল হক ভূঁইয়া বলেন, ‘পূর্বঘোষিত কর্মসূচি হিসেবে আমরা আজ থেকে সর্বাত্মক কর্মবিরতি শুরু করেছি। সারা দেশের সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা এতে একাত্মতা ঘোষণা করে কর্মবিরতি পালন করেছেন৷ আমাদের তিন দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এ সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালন হবে।’
ঢাবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. জিনাত হুদা বলেন, ‘আমাদের দাবি নিয়ে আমরা সম্প্রতি শিক্ষামন্ত্রীর সাথে বৈঠক করেছি। উনার সাথে একটা আলোচনা হয়েছে, কিন্তু এরপর আর কোনো আলোচনা হয়নি। অর্থ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকেও আমাদের সাথে কোনো টেবিল টক বা ডিসকাশনে যাওয়া হয়নি।’
তিনি বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন ধরে দুই ঘণ্টার কর্মবিরতি, অর্ধদিবস কর্মবিরতি আর গতকাল পূর্ণদিবস কর্মবিরতি করেছি। সব ক্ষেত্রেই আমরা বিশ্ববিদ্যালয় এবং শিক্ষার্থীদের স্বার্থ দেখেছি।
‘আমরা পরীক্ষা এবং অতি গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক কার্যক্রমকে আওতামুক্ত রেখেছি, কিন্তু সরকারের কেউই আমাদের কথা শুনবার প্রয়োজনীতা অনুভব করেনি। এখন আমাদের আর ফিরবার কোনো পথ নেই।’
গত ১৩ মার্চ অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপন জারির পর গত ২০ মে সর্বজনীন পেনশন স্কিম সংক্রান্ত ‘বৈষম্যমূলক প্রজ্ঞাপন’ প্রত্যাহার এবং পূর্বের পেনশন স্কিম চালু রাখার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন। এরপর ২৬ মে বেলা সাড়ে ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সারা দেশের ৩৬টি বিশ্ববিদ্যালয়ে একযোগে মানববন্ধন করেন শিক্ষকরা। পরে ২৮ মে দুই ঘণ্টা এবং ২৫-২৭ জুন তিন দিন সারা দেশে অর্ধদিবস কর্মবিরতি পালন করা হয়।
গতকাল পূর্ণ কর্মবিরতি পালন করে আজ থেকে সর্বাত্মক কর্মবিরতি শুরু হয় শিক্ষকদের।