Friday, July 18, 2025

সর্বশেষ

শ্রেষ্ঠ সন্তানদের স্মরণে লাল-সবুজে সেজেছে জাতীয় স্মৃতিসৌধ

আগামীকাল ৫৪তম মহান বিজয় দিবস। ৯ মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের বিনিময়ে পৃথিবীর বুকে স্থান পায় একটি ভূখণ্ড। ৩০ লাখ মানুষের রক্তে রঞ্জিত হয়ে ওঠে বাংলার ভূমি। এতে অর্জিত হয় মাতৃভূমি বাংলাদেশ, পায় স্বাধীনতা। বাঙালি জাতি পায় লাল-সবুজের পতাকা। শত শত সন্তানহারা মায়ের আর্তনাদ ও হাজার হাজার মা-বোনের সম্ভ্রম হারিয়ে বিজয় নিশান ওঠে বাঙলার বুকে।

সেই সব আত্মদানকারী বীরদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে প্রস্তুত জাতীয় স্মৃতিসৌধ, প্রস্তুতি নিচ্ছে বাঙালি জাতি। জাতীয় স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণকে সাজিয়ে তোলা হয়েছে লাল-সবুজে আভায়। আগামীকাল বীর সন্তাদের শ্রদ্ধা জানাতে স্মৃতিসৌধে নামবে হাজারো মানুষের ঢল। তাই ঢাকা জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা।

সরেজমিনে দেখা যায়, জাতীয় স্মৃতিসৌধে প্রাঙ্গণকে করা হয়েছে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন। রং তুলির আঁচড় ও বাহারি ফুল ও সৌন্দর্যবর্ধনকারী গাছে আভায় তৈরি করা হয়েছে লাল-সবুজের পতাকা। মেঝেতে রং তুলির আঁচড়ে করে তুলা হয়েছে পরিপাটি। বিভিন্ন ফুলগাছি ছড়াছে মনোমুগ্ধকর সুবাস। এছাড়া লেক সংস্কার ও স্মৃতিসৌধের পাদদেশ থেকে চূড়া পর্যন্ত ধুয়ে-মুছে করা হয়ে পরিষ্কার। স্মৃতির মিনারের শহীদ বেদী শ্রদ্ধা জানাতে প্রস্তুত করা হয়েছে।

জাতীয় স্মৃতিসৌধে পরিচ্ছন্নকর্মী আমেনা বলেন, আমি এখানে দীর্ঘ দিন ধরে স্মৃতিসৌধে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নের কাজ করি। বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে কাজ করছি। শহীদদের জন্য কাজ করতে পেরে অনেক ভালো লাগে বলে জানান তিনি।

অন্যদিকে রাজমিস্ত্রি আবুল কালাম বলেন, স্মৃতিসৌধে ধোয়া-মোছার কাজ প্রায় শেষ। অনেক স্থানে প্লাস্টারের কাজ করেছি এবং ভাঙা স্থান সংস্কার করা হয়েছে। এখন কাজ অনেকটাই শেষ হয়েছে বলে জানান তিনি।

এ বিষয়ে গণপূর্ত বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি, প্রধান উপদেষ্টা ও উপদেষ্টামন্ডলী, বিদেশি কূটনীতিকসহ লাখ লাখ জনতা বীর শহীদদের স্মরণে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। এরপরে সর্ব সাধারণের জন্য জাতীয় স্মৃতিসৌধ উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে। সেজন্য গণপূর্ত বিভাগের পক্ষ থেকে জাতীয় স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও রং করা, সিসি ক্যামেরা স্থাপন, লেক সংস্কার, সীমানা প্রাচীর মেরামতসহ সব কাজ সম্পূর্ণ করেছি। বর্তমানে জাতীয় স্মৃতিসৌধ শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত রয়েছে বলে জানান তিনি।

অন্যদিকে পুলিশের ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি এ কে এম আওলাদ হোসেন বলেন, ঢাকা জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে স্মৃতিসৌধ ও তার আশপাশের এলাকাগুলোতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। এছাড়াও চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে এবং সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নজর রাখবে বলে জানান পুলিশের ওই কর্মকর্তা।

এছাড়াও এ বছর ছাত্র আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে ফ্যাসিবাদী শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর নতুন আকাঙ্ক্ষা সৃষ্টি হয়েছে। এতে বিজয় দিবস ঘিরে দীর্ঘ ১৭ বছর পরে ভিন্ন মাত্রায় প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপি।

আশুলিয়া থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল গফুর মিয়া ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা বিগত ১৬টি বছর আন্দোলনের মধ্যে ছিলাম। তখন আমাদের স্মৃতিসৌধে যেতে দেওয়া হয়নি। বিভিন্ন মামলা হামলার কারণে বিজয় দিবসে শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে স্মৃতিসৌধে আমরা আসতে পারিনি। এ বছর ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মধ্য দিয়ে ফের স্বাধীনতা অর্জন করেছি। সেজন্য এবার বিজয় দিবসে আশুলিয়া বিএনপির পক্ষ থেকে প্রচুর লোকজনের সমাগম করতে পারব। এর জন্য আমরা ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছি।

সাভারের তেঁতুলঝড়া ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মুরাদ হোসেন বলেন, আমরা দীর্ঘ দিন পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে পরাধীনতা থেকে মুক্ত হয়েছি। এবার বীর শহীদদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করব। এ বছর সব নেতাকর্মী মিলে শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানাতে যাব।

সর্বশেষ

নির্বাচিত

Stay in touch

To be updated with all the latest news, offers and special announcements.