Saturday, April 19, 2025

সর্বশেষ

নাফ নদী থেকে অস্ত্রের মুখে চার বাংলাদেশি জেলেকে জিম্মি করে নিয়ে গেল আরাকান আর্মি

কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার নাফ নদীর মোহনা থেকে একটি নৌকাসহ চার বাংলাদেশি জেলেকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে নিয়ে গেছেন মিয়ানমারের সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির (এএ) সদস্যরা। আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে উপজেলার সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপের গোলারচর মোহনার কাছাকাছি নাইক্ষ্যংদিয়া এলাকা থেকে তাঁদের জিম্মি করা হয়।

ওই চার জেলে হলেন সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপ দক্ষিণপাড়ার বাসিন্দা মোহাম্মদ হাছান (৩০), আব্দু রকিম (২০), মোহাম্মদ জাবের (২৬) ও মোহাম্মদ হাসান (১৬)।

প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন শাহপরীর দ্বীপ কোস্টগার্ডের স্টেশন কমান্ডার লেফটেন্যান্ট এইচ এম সারতাজ বিন সোহরাব ও শাহপরীর দ্বীপের দক্ষিণ নৌঘাটের নৌকা মালিক সমিতির সভাপতি বশির আহমেদ।

মিয়ানমারের সরকারি জান্তা বাহিনীর সঙ্গে টানা ১১ মাস সংঘাতের পর গত ৮ ডিসেম্বের রাখাইন রাজ্যের মংডু টাউনশিপ দখলে নেন স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির সদস্যরা। এর পর থেকে নাফ নদীতে তাঁদের জলসীমানায় নৌযান চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।

স্থানীয় লোকজনের বরাত দিয়ে লেফটেন্যান্ট সারতাজ বিন সোহরাব বলেন, আজ সকালে শাহপরীর দ্বীপ দক্ষিণপাড়ার বাসিন্দা মোহাম্মদ হাছান চার জেলেসহ তাঁর মালিকানাধীন নৌকা নিয়ে প্রতিদিনের মতো নাফ নদীর মোহনায় মাছ ধরতে যান। একপর্যায়ে মিয়ানমারের দিক থেকে একটি স্পিডবোটে করে আসা লোকজন অস্ত্রের মুখে বাংলাদেশি জেলেদের নৌকাটিকে ঘিরে ফেলে। পরে জেলেরাসহ নৌকাটি নিয়ে মিয়ানমারের দিকে চলে যায়। ঘটনাটি স্থানীয়দের কাছ থেকে কোস্টগার্ড অবহিত হয়। পরে বিষয়টি কোস্টগার্ডের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের পাশাপাশি বিজিবি ও প্রশাসনের সংশ্লিষ্টদের অবহিত করা হয়েছে।

শাহপরীর দ্বীপের দক্ষিণ নৌঘাটের নৌকা মালিক সমিতির সভাপতি বশির আহমেদ বলেন, এ ঘটনায় জেলেপল্লিতে আতঙ্ক বিরাজ করছে। ঘটনাটি বিজিবিসহ স্থানীয় প্রশাসনকে জানানো হয়েছে।

স্থানীয় কয়েকজন জনপ্রতিনিধি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, মাছ ধরার নৌকার আড়ালে কিছু মাদক কারবারি মিয়ানমার থেকে মাদকের বড় বড় চালান পাচার করছে। ১ ফেব্রুয়ারি মাদকের চালান পাচার করতে গিয়ে যুবদল নেতার নৌকা থেকে ১ লাখ ৬০ হাজার ইয়াবা বড়ি উদ্ধার করা হয়। ওই ঘটনায় কোস্টগার্ডের ধাওয়ায় পানিতে পড়ে আবদুস শফি (৪৫) নামে একজন জেলে মারা যান।

জানতে চাইলে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, ‘জেলেদের ধরে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি শুনেছি। তাঁদের ফেরত আনতে আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করছে।’ ইউএনও আরও বলেন, মিয়ানমারের অভ্যন্তরে সংঘাতের কারণে সীমান্তের ওপারে অধিকাংশ এলাকা আরাকান আর্মির দখলে আছে। এতে ধারণা করা হচ্ছে, আরাকান আর্মির লোকজনই বাংলাদেশি জেলেদের ধরে নিয়ে থাকতে পারে। তবে বিজিবি ও কোস্টগার্ড নাফ নদী সীমান্তে নিরাপত্তার পাশাপাশি নজরদারি বৃদ্ধি করেছে।

সর্বশেষ

নির্বাচিত

Stay in touch

To be updated with all the latest news, offers and special announcements.