বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কার্যক্রম করার অভিযোগ তুলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্য’ কালো কাপড়ে ঢেকে দিয়েছে ছাত্রলীগ।
মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর রাজু ভাস্কর্যে ছাত্রলীগের স্থাপিত প্রধানমন্ত্রীর ছবি সংবলিত মেট্রোরেলের অস্থায়ী প্রতিকৃতি ভাঙচুরের পর রাতে ভাস্কর্যটি কালো কাপড়ে ঢেকে দেওয়া হয়।
বুধবার (১৩ ডিসেম্বর) সকালে রাজু ভাস্কর্যের সামনে গিয়ে দেখা যায়, কালো কাপড়ে রাজু ভাস্কর্য ঢেকে দেওয়ার পাশাপাশি গত রাতে ভাস্কর্যের কাঠামোর ওপর একটি ব্যানারও সাঁটিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাতে লেখা রয়েছে ‘সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যে ছাত্র ইউনিয়নের সন্ত্রাসী কার্যক্রম’।
ছাত্রলীগের একাধিক নেতাকর্মী জানিয়েছেন, তাদের সংগঠনের উদ্যোগেই এই কাজ করা হয়েছে। তবে ছাত্রলীগের নেতারা বলছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ হিসেবে এটা করেছেন।
জানতে চাইলে ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ ক্যাম্পাসে সব ধরনের গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক সংগঠনের সহাবস্থানে বিশ্বাস করে। রাজু ভাস্কর্যের সামনে জাতির পিতার কন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনার একটি প্রতিকৃতি ছিল। দুষ্কৃতিকারীরা সেটি ভেঙে দিয়েছে। এটি একটি ন্যাক্কারজনক ঘটনা। এর প্রতিবাদে সাধারণ শিক্ষার্থীরা রাজু ভাস্কর্য ঢেকে দিয়েছে।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বামপন্থী ছাত্রসংগঠনগুলোর মোর্চা গণতান্ত্রিক ছাত্রজোটের উদ্যোগে জোটভুক্ত সংগঠনগুলো পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সাবেক সভাপতি বিপুল চাকমাসহ চারজনকে হত্যার প্রতিবাদে ক্যাম্পাসে মশাল মিছিল করে। মিছিল শেষে সমাবেশ করতে রাজু ভাস্কর্যের সামনে এলে মিছিল থেকে প্রধানমন্ত্রীর ছবি সংবলিত মেট্রোরেলের প্রতিকৃতিতে ভাঙচুর করে বলে অভিযোগ করে ছাত্রলীগ। পরে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তাদের ওপর হামলা করেন। এতে বামপন্থী ছাত্র সংগঠনগুলোর ৮ থেকে ১০ জন নেতাকর্মী আহত হন।
ছাত্র ইউনিয়নের একাংশের সভাপতি রাগীব নাঈম বলেন, রাজু ভাস্কর্য গত সাত-আট দিন ঢেকে রাখা হয়েছে। আমরা যখন ওদের (ছাত্রলীগের) সঙ্গে কথা বলেছি, তখন তারা বলেছে কয়েকদিন পর সরিয়ে দিবে। কিন্তু সরানো হয়নি দেখে আমাদের লোকজন সরানোর বন্দোবস্ত করতে গেলে ছাত্রলীগ আমাদের ওপর হামলা করেছে। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় সভাপতি মেঘমাল্লার বোসসহ প্রায় ৩০জন আহত হয়েছে। আমাদের লোকজনকে এখনও যেখানে পাচ্ছে মারতেছে।
এ বিষয়ে ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত বলেন, ছাত্র ইউনিয়নের সন্ত্রাসী কার্যকলাপে শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হয়েছেন। যারা কাজটি (মেট্রোরেলের প্রতিকৃতি ভাঙচুর) করেছে, তাদের দ্রুত ক্ষমা প্রার্থনা করা উচিত।