Thursday, December 5, 2024

সর্বশেষ

সন্তানকে বুকে জড়িয়েই পুড়ে মারা যান পপি

নেত্রকোণা থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে সোমবার রাতে মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেসে ওঠেন একই পরিবারের চারজন। বিমানবন্দর স্টেশনে ট্রেনটি যাত্রাবিরতি শেষে চলতে শুরু করে। এর পরপরই হঠাৎ ধোঁয়ায় ভরে যায় কামরা। আতঙ্কিত যাত্রীরা ভেতরে চিৎকার চেঁচামেচি করতে থাকেন।

তবে ট্রেনের চালক বুঝতেই পারেননি আগুন লেগেছে। ততক্ষণে তেজগাঁও স্টেশনে ট্রেনটি এসে থামে। এ সময় হুড়োহুড়ি করে সবাই নেমে পড়লেও চার হতভাগ্য নামতে পারেননি। তাদের মধ্যে ছিলেন নাদিরা আক্তার পপি ও তার তিন বছরের ছেলে ইয়াসিন। আগুনে পুড়ে মর্মান্তিক মৃত্যু হয় তাদের।

মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) ভোর ৫টায় এ ঘটনা ঘটে।

পপির দেবর প্রকৌশলী মিনহাজুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, ভাবির কোলে ছিল ছোট্ট ইয়াসিন। বাচ্চা নিয়ে উনি আর নামতে পারেননি। আগুন নেভানোর পর ওনার লাশ উদ্ধার করা হয়। তখনও তার কোলে ছিল সন্তানের মৃতদেহ। দুজন একসঙ্গে পুড়ে মারা গেছেন। সন্তানকে বুকে জড়িয়েই পুড়ে মারা যান পপি।

মিনহাজুর জানান, তার ভাই মিজানুর রহমান কারওয়ান বাজারে হার্ডওয়্যার সামগ্রীর ব্যবসা করেন। তিনি রাজধানীর তেজতুরী বাজার এলাকায় থাকেন। তার সঙ্গেই থাকতেন পপি ও তাদের দুই সন্তান। সোমবার গ্রামের বাড়ি থেকে অন্য স্বজনের সঙ্গে তারা ফিরছিলেন। তারা সবাই ছিলেন ‘জ’ কোচের যাত্রী। তাদের মধ্যে পপির বড় ছেলে মাহিন (৯) ও ভাই হাবিব ট্রেন থেকে নামতে পেরেছেন। পরে তারা লক্ষ্য করেন পপি ও ইয়াসিন নেই। তবে ততক্ষণে ট্রেনের ওই কোচটিতে দাউদাউ করে আগুন জ্বলছে। ফলে কিছুই করার ছিল না। ফায়ার সার্ভিস আগুন নেভানোর পর চারজনের লাশ উদ্ধার করে। তাদের মধ্যে দু’জন পপি ও তার শিশু সন্তান ইয়াসিন।

তিনি বলেন, লাশ দেখে বোঝা যায়, শেষমুহূর্ত পর্যন্ত সন্তানকে বুকে আগলে বাঁচানোর চেষ্টা করেন ভাবি। তবে অনেক লোকের হুড়োহুড়ির মধ্যে পারেননি। সন্তানকে বুকে নিয়েই জীবন্ত পুড়ে মারা যান।

ফায়ার সার্ভিস সদর দপ্তর থেকে ডিউটি অফিসার রাকিবুল হাসান জানান, ভোর ৫ টা ৪ মিনিটে আগুনের সংবাদে সেখানে তিনটি ইউনিট পাঠানো হয়। পৌনে সাতটার দিকে আগুন নির্বাপণ করা হয়।

সর্বশেষ

নির্বাচিত

Stay in touch

To be updated with all the latest news, offers and special announcements.