বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘দেশের জনগণের কষ্টার্জিত টাকা লুট করে বিদেশে পাচার করেছে আওয়ামী লীগ সরকার। এখন সেই লুটের টাকা তারা ডামি ভোটে ঢালছে।’
রোববার (২৪ ডিসেম্বর) সকালে অবরোধের সমর্থনে কুমিল্লার ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চান্দিনা গোবিন্দপুর বাস স্ট্যান্ড এলাকায় বিক্ষোভ মিছিলে এ কথা বলেন তিনি।
সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে রিজভী বলেন, ‘আজকে দেশের অর্থনীতির কী করুণ পরিণতি! বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সিপিডি বলেছে, ২০০৮ থেকে ২০২৩ পর্যন্ত এই ১৫ বছরে ব্যাংক খাত থেকে অনিয়মের মাধ্যমে ৯২ হাজার ২৬১ কোটি টাকা লুটপাট করা হয়েছে। ব্যাংক খাত থেকে অনিয়মের মাধ্যমে বের করে নেওয়া এ অর্থ ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটের ১২ শতাংশের বেশি। ফলে এ অর্থে অনায়াসে বাজেট ঘাটতি মেটানো সম্ভব হত।’
তিনি অভিযোগ করেন, ‘আজকে আওয়ামী লীগ সরকার বিরোধী দল ছাড়াই একতরফা ডামি নির্বাচনের আয়োজন করেছে। অথচ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে দেশের জনগণ রাজপথে আন্দোলন করছে। গণতান্ত্রিক বিশ্ব বাংলাদেশে একটি অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের তাগিদ দিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু গায়ের জোরে রাষ্ট্র যন্ত্র ব্যবহারের মাধ্যমে নিশিরাতের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সেদিকে লক্ষ্য নেই। তার লক্ষ্য অমল ধবল ক্ষমতা।’
একতরফা ডামি নির্বাচনেও আওয়ামী লীগ নিজেরা নিজেরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ছে। ইতিমধ্যে কয়েকজনের প্রাণহানি ঘটেছে। তারা নিজেরা পরিকল্পিতভাবে গাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড করছে। আর এসবের দোষ চাপানো হচ্ছে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে আন্দোলনরত বিরোধী দলগুলোর ওপর; যা আওয়ামী লীগের পুরনো অভ্যাস,’ বলেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ এই নেতা।
রিজভী আরও বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার যতই টালবাহানা করুক কোনো লাভ হবে না। তাদেরকে ক্ষমতা ছেড়ে চলে যেতেই হবে। আজকে শুধু বাংলাদেশের জনগণ নয়, গণতান্ত্রিক বিশ্ব আওয়ামী লীগের ডামি নির্বাচন প্রত্যাখান করেছে। জাতিসংঘ ও অস্ট্রেলিয়া এই পাতানো নির্বাচনে কোনো পর্যবেক্ষক পাঠাবে না বলে ঘোষণা দিয়েছে। বিএনপির চলমান অসহযোগ আন্দোলনে জনগণ সাড়া দিয়ে বলছে- আওয়ামী লীগ আর না, ডামি নির্বাচনে ভোট দিব না। দেশের জনগণ, ভোটার ও সচেতন নাগরিকদের কাছে উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি আপনারা নিজে ভোট বর্জন করুন এবং ভোট বর্জনে অন্যকে উৎসাহিত করুন।’
মিছিলে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. মো. রফিকুল ইসলাম, গণশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়া, কুমিল্লা উত্তর জেলা ছাত্রদলের সাবেক সদস্য সচিব তৌহিদুল ইসলাম বাবু, সাবেক সভাপতি বোরহান উদ্দিন ভূইয়া, উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি শরীফুজ্জামান, জেলা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম সাজ্জাদ, সহ-সভাপতি ফারুক আহমদ, জেলার সহসভাপতি মুন্জুরুল ইসলাম, চান্দিনা উপজেলার সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব আলম, জেলা ছাত্রদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মাসুদুর রহমান, মেঘনা উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক কেফায়েত উল্লাহ, মেঘনা বিএনপি নেতা সেকান্দর হোসাইন, কাজল, মহিউদ্দিন, সোহাগসহ বিভিন্ন স্তরের শতাধিক নেতাকর্মী।