রিটার্নিং কর্মকর্তাদের সঙ্গে সমন্বয় করে জেলা, উপজেলা ও থানায় সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের মোতায়েন করা হবে; যারা নির্বাহী হাকিমদের সঙ্গে মাঠে থাকবেন।
আগামী ৭ জানুয়ারির ভোটের আগে ও পরে মিলিয়ে ১৩ দিন সেনা মোতায়েনের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
মঙ্গলবার নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ জানান, সশস্ত্রবাহিনী মোতায়েন শুরু হবে ২৯ ডিসেম্বর থেকে। ক্যান্টনমেন্ট থেকে দেশের বিভিন্ন জায়গায় যাতায়াতসহ এ সময় শুরু হবে।
ওই দিন থেকে সমন্বয় সেলের কার্যক্রম শুরু হবে। ৩০০ নির্বাচনি এলাকায় যাতায়াত সময় ছাড়া ৩ থেকে ১০ পর্যন্ত জানুয়ারি রিটার্নিং অফিসারের সঙ্গে সমন্বয় করে জেলা, উপজেলা ও মহানগর এলাকায় নির্বাহী হাকিমের সঙ্গে সেনা সদস্যরা মাঠে থাকবেন। অর্থাৎ ভোট কেন্দ্রে যাতায়াতের জন্য তাদের ২৯ ডিসেম্বর থেকে ২ জানুয়ারি সময় রাখা হয়েছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত পরিপত্র জারির প্রসঙ্গ তুলে ধরে ইসির অতিরিক্ত সচিব বলেন, সশস্ত্রবাহিনী বিভাগ যাতায়াতের সময়সীমা ব্যতীত ৩ থেকে ১০ জানুয়ারির কাজের পরিধি ও পরিকল্পনা তুলে ধরেছে।
“এটা নিয়ে ভুল বুঝছেন অনেকে। আসলে মোতায়েনের সময় ১৩ দিনের জন্য, এক্ষেত্রে যাতায়াতের সময়সহ ধরা হয়েছে। কিন্তু নির্বাচনি এলাকায় পৌঁছে অ্যাকশনে যাবে ৩ জানুয়ারি থেকে। এ সময় দৃশ্যমানও হবে তারা, স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে টিমের সাথে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটও থাকবে।”
৭ জানুয়ারির ভোটকে সামনে রেখে ২৯ ডিসেম্বর থেকে ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত পুলিশ-র্যাব ও বিজিবিসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েন নিয়ে বৃহস্পতিবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা হয়। এবার সেনা সদস্য ছাড়াও অন্যান্য বাহিনীর প্রায় সাড়ে সাত লাখ সদস্য নির্বাচনকালীন দায়িত্ব পালন করবেন।
এ ধারাবাহিকতায় সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ থেকে নির্বাচন কমিশনের সচিবসহ সংশ্লিষ্টদের ভোটে সশস্ত্রবাহিনী নিয়োগ সংক্রান্ত চিঠি দেয়।
এতে বলা হয়, “দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন-২০২৪ অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশনের অনুরোধের প্রেক্ষিতে বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা প্রদানের নিমিত্তে ‘ইন এইড টু সিভিল পাওয়ার’ এর আওতায় সমগ্র বাংলাদেশের ৩০০টি নির্বাচনি এলাকায় আগামী ৩ জানুয়ারি ২০২৪ তারিখ হতে ১০ জানুয়ারি ২০২৪ তারিখ পর্যন্ত (যাতায়াত সময়সীমা য্যতীত) সশস্ত্র বাহিনী নিয়োগে আদেশ দেওয়া হল।
“সশস্ত্র বাহিনীর নিয়োজিত দলগুলো ফৌজদারী কার্যবিধি ও অন্যান্য আইনি বিধান এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় হতে জারি করা বিধান অনুযায়ী পরিচালিত হবে। মোতায়েন করা সশস্ত্রবাহিনী নির্বাচনি কাজে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটের পরামর্শে ফৌজদারী কার্যবিধি অনুযায়ী বেসামরিক প্রশাসনকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সহায়তা করবে।”
সশস্ত্রবাহিনীর নির্বাচনে মোতায়েন সংক্রান্ত কার্যক্রম সশস্ত্রবাহিনী বিভাগ সমন্বয় করবে। এ জন্য ২৯ ডিসেম্বর থেকে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগে একটি সমন্বয় সেল পরিচালনা করা হবে। এছাড়াও বাহিনীগুলোর প্রয়োজন অনুযায়ী সমন্বয় সেল স্থাপন ও পরিচালনা করবে।
চিঠিতে বলা হয়, “সশস্ত্র বাহিনী নিয়োগ সংক্রান্ত যাবতীয় ব্যয়ভার তথা সামরিক ও বেসামরিক যানবাহনের জ্বালানি, রক্ষণাবেক্ষণ ও ভাড়া, সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের দৈনিক ভাতা, কনটিনজেন্সি, ক্যাম্প, বাসস্থান পানি, বিদ্যুৎ, গ্যাস ও টেলিফোন বিল নির্বাচন কমিশন বহন করবে।“
নির্বাচনকালীন দায়িত্বের বিস্তারিত পরিকল্পনা শিগগির অবহিত করবে সশস্ত্রবাহিনী বিভাগ।
পাশাপাশি নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আলোচনার প্রেক্ষিতে নির্বাচনের কয়েকদিন আগে থেকে নির্বাচনি এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা, ভৌত অবকাঠামো এবং নির্বাচনি পরিবেশ পরিস্থিতির প্রাথমিক তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করতে অগ্রগামী দল পাঠানো হবে।
যেসব সহায়তায় সশস্ত্র বাহিনী
সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা প্রতিটি জেলা/উপজেলা/মেট্রোপলিটন এলাকার নোডাল পয়েন্ট এবং সুবিধাজনক স্থানে নিয়োজিত থাকবে।
রিটার্নিং অফিসারের সঙ্গে সমন্বয় করে জেলা/উপজেলা/থানায় সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদেরকে মোতায়েন করা হবে।
সশস্ত্র বাহিনীর টিমের সঙ্গে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করবেন রিটার্নিং অফিসার এবং আইন, বিধি ও পদ্ধতিগতভাবে কার্যক্রম গৃহীত হবে।
সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসারের অনুরোধক্রমে ও সমন্বয়ের মাধ্যমে এলাকাভিত্তিক ডেপ্লয়মেন্ট প্ল্যান (মোতায়েন পরিকল্পনা) চূড়ান্ত করা হবে।
বাস্তবতা ও প্রয়োজনীয়তা অনুযায়ী রিটার্নিং অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং অফিসারের অনুরোধক্রমে চাহিদামত আইনানুগ অন্যান্য কার্যক্রম সম্পাদন করা হবে।