বাংলাদেশকে ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত স্মার্ট সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে তোলার জন্য নৌকা মার্কায় ভোট চেয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটের আগে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিতে এসে আরেকবার জনগণের সেবা করার সুযোগ চেয়েছেন তিনি; যিনি টানা ১৫ বছর ধরে বাংলাদেশের নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আজকে আপনাদের কাছে নৌকা মার্কায় ভোট চাইতে হাজির হয়েছি। এই উন্নয়নকে টেকসই করা, আপনাদের জীবনমান উন্নত করা, আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশকে ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত স্মার্ট সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে তোলার সুযোগ চাই।’
বৃহস্পতিবার (৪ জানুয়ারি) জাতির উদ্দেশে দেওয়া শেখ হাসিনার ভাষণ টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচারিত হয়। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে দলের ইশতেহারের গুরুত্ব ও নির্বাচিত হলে কী কী করবে আওয়ামী লীগ– সেসব বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে তার এই ভাষণ।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘উৎপাদন বৃদ্ধি করে খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করা, দারিদ্র্য হ্রাস, ভূমিহীন-গৃহহীন পরিবারগুলোর ঘরবাড়ি ও জীবন-জীবিকার স্থায়ী ব্যবস্থা করা, যুগোপযোগী শিক্ষাব্যবস্থায় আমাদের আজকের শিশু ও তরুণদের সুশিক্ষিত করা, স্বাস্থ্যসেবা আরও উন্নত করা, ১০০টা অর্থনৈতিক অঞ্চলে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগের মাধ্যমে ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা, প্রতি উপজেলায় কারিগরি ও কম্পিউটার ট্রেনিংয়ের সুযোগ সৃষ্টি করা, দক্ষ জনশক্তি রপ্তানির জন্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নতুন কর্মক্ষেত্র খুঁজে বের করা, গ্রামের মানুষের জন্য নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করা, রাস্তাঘাট উন্নত করা, বিদ্যুৎ, সুপেয় পানি ও স্যানিটেশনের যে ব্যবস্থা নিয়েছি– তা টেকসই করে সব মানুষের জীবনমান উন্নত করাই আওয়ামী লীগ সরকারের লক্ষ্য। আপনাদের মূল্যবান ভোটে নির্বাচিত হয়ে আরেকটিবার সরকার গঠন করতে পারলে আমাদের গৃহীত কর্মসূচিগুলো বাস্তবায়ন করে আপনাদের জীবনমান আরও উন্নত করার সুযোগ পাব।’
তিনি বলেন, ‘নদী, খাল, পুকুর, জলাধার খনন, ব্যাপকভাবে বৃক্ষরোপণ, বনায়ন সৃষ্টি, উপকূলীয় অঞ্চলে সবুজবেষ্টনী তৈরি করে সাইক্লোন, জলোচ্ছ্বাস, বন্যা, নদীভাঙনের হাত থেকে দেশের জনগণকে জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত থেকে সুরক্ষার ব্যবস্থা করব।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সড়ক, রেল, নৌ, বিমানপথ ও সেবা উন্নত করে যোগাযোগ অবকাঠামোর ব্যাপক উন্নয়ন করা হবে। কৃষি যান্ত্রিকীকরণ, অধিক ফসল উৎপাদন, খাদ্য সংরক্ষণ, খাদ্য ও কৃষিপণ্য প্রক্রিয়াজাত করা, দেশের চাহিদা পূরণ করা ও বিদেশে রপ্তানির উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার কাজ অব্যাহত থাকবে। রপ্তানি বাণিজ্য সম্প্রসারণ করার লক্ষ্যে নতুন বাজার খুঁজে বের করা, উপযুক্ত পণ্য উৎপাদন বৃদ্ধি করা হবে। সেক্ষেত্রে ডিজিটাল ডিভাইস, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, পাট ও পাটজাত পণ্য, কৃষি ও খাদ্য প্রক্রিয়াজাত, ঔষধ, কুটির শিল্প, ক্ষুদ্র, মাঝারি ও ভারী শিল্প উৎপাদন, জাহাজ নির্মাণ এবং জাহাজ রিসাইক্লিনং শিল্প ও কারখানা গড়ে তোলার কাজ অব্যাহত থাকবে। ব্যাপক বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই লক্ষ্যে কৃষিপণ্য, স্বাস্থ্যবিজ্ঞান, প্রযুক্তিবিজ্ঞান, পরমাণু গবেষণা, অ্যারোস্পেস ও অ্যাভিয়েশন গবেষণা, সমুদ্র গবেষণা, জলবায়ু পরিবর্তন গবেষণার জন্য ইনস্টিটিউশন ও গবেষণাগার তৈরির কাজ সম্পন্ন করতে হবে।’