সব সংকট কাটিয়ে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটগ্রহণের দিনটি এখন দুয়ারে কড়া নাড়ছে। মাঝখানে শুধু শনিবার; রবিবার গণরায়। এদিন সারা দেশের ভোটাররা ২৯৯ সংসদীয় আসনে তাদের নেতা নির্বাচনের লক্ষ্যে ভোট প্রয়োগ করবেন।
পৌষের শীতেও প্রার্থী এবং কর্মী-সমর্থকদের ঘাম ঝরিয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার দিন শেষেই কার্যত শেষ হয়ে গেছে আনুষ্ঠানিক প্রচার। যদিও নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী আজ শুক্রবার সকাল ৮টা পর্যন্ত প্রচারের শেষ সময় নির্ধারিত রয়েছে। ফলে দিন শুরুর অল্প সময়কে মাথায় না রেখে বেশিরভাগ প্রার্থীই গতকাল তাদের মূল নির্বাচনী প্রচার শেষ করেছেন।
আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা গতকাল তার শেষ নির্বাচনী জনসভা করেছেন নারায়ণগঞ্জে। এবারের নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে মোট ২৮টি দল। দলীয় এবং স্বতন্ত্র মিলে মোট প্রার্থী ১ হাজার ৯৭০ জন। এর মধ্যে দলীয় প্রার্থী ১ হাজার ৫৩৪ জন, আর স্বতন্ত্র ৪৩৬ জন। ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়ে আন্দোলনের মাঠে রয়েছে বিএনপিসহ নিবন্ধিত ১৬টি রাজনৈতিক দল।
সারা দেশে দলীয় প্রতীক ও স্বতন্ত্র থেকে নারী ও ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর প্রার্থীরাও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। সারা দেশে মোট ৯০ জন নারী প্রার্থী ভোটে অংশ নিয়েছেন। অন্যদিকে দেশের বিভিন্ন সংসদীয় আসন থেকে ৭৯ জন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর প্রার্থী ভোটে লড়াই করছেন। নারী ও ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী মিলিয়ে মোট ১৬৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা যায়, এবার সবচেয়ে বেশি আওয়ামী লীগের প্রার্থী ২৬৬ জন, এরপরই রয়েছে জাতীয় পার্টির ২৬৫ জন, তৃণমূল বিএনপির ১৩৫ জন, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির ১২২ জন, বাংলাদেশ কংগ্রেসের ৯৬ জন, ইসলামী ফ্রন্ট বাংলাদেশের ৩৯ জন, ইসলামী ঐক্যজোট ৪২ জন, কৃষক শ্রমিক জনতা-লীগের ৩০ জন, গণফোরাম নয়জন, গণ-ফ্রন্টের ২১ জন, জাকের পার্টির ২১ জন, জাতীয় পার্টির (জেপি) ১৩ জন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) ৬৬ জন, বিকল্পধারা বাংলাদেশের দশজন।
বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট ৩৫ জন, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির ১৬ জন, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন ১১ জন, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির পাঁচজন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের ৫৬ জন, বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের ৩৮ জন, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির (ন্যাপ) পাঁচজন, বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট-বিএনএফের ৪৫ জন, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের চারজন, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির ৭৯ জন, বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের ৬৩ জন, বাংলাদেশ ওয়াকার্স পার্টির ২৬ জন, বাংলাদেশের সাম্যবাদী দলের (মার্কসবাদী-লেনিনবাদী) চারজন, গণতন্ত্রী পার্টির দশজন। ২৮টি রাজনৈতিক দলের মোট প্রার্থী সংখ্যা ১ হাজার ৫৩৪ জন। এর বাইরে স্বতন্ত্র প্রার্থী রয়েছে ৪৩৬ জন। মোট প্রার্থীর মধ্যে ৭৫ জন হাইকোর্ট থেকে প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন।
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ৪২ হাজার ১৪৯টি। এর মধ্যে ১০ হাজার ৩০০টি ঝুঁকিপূর্ণ (অতি গুরুত্বপূর্ণ) বলে ইসি থেকে জানা গেছে। ইসি জানায়, দেশে মোট ভোটার ১১ কোটি ৯৬ লাখ ৯১ হাজার ৬৩৩ জন। এর মধ্যে নারী ৫ কোটি ৮৯ লাখ ১৯ হাজার ২০২ জন, পুরুষ ৬ কোটি ৭ লাখ ৭১ হাজার ৫৭৯ জন এবং তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার ৮৫২ জন।