পুলিশের সাবেক প্রধান বেনজীর আহমেদ ও সেনাবাহিনীর সাবেক প্রধান আজিজ আহমেদ ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের কেউ নন বলে জানিয়েছেন দলটির সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
মঙ্গলবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে এক প্রতিনিধি সভায় তিনি এ কথা জানান। ঐতিহাসিক ৬ দফা দিবস ও আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে এই সভার আয়োজন করে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বেনজীর আহমেদ আমাদের দলের (আওয়ামী লীগ) লোক নয়। সিনিয়ররিটি নিয়ে সে আইজিপি হয়েছে। আজিজ আহমেদও আমাদের দলের লোক নয়। সেনাপ্রধান হয়েছেন নিজ যোগ্যতায় সিনিয়রিটি নিয়ে। আমরা তাকে বানাইনি। যখন কোনো অপরাধ করে সরকারের কাছে খবর আসে তার বিচার করার সৎ সাহস শেখ হাসিনার সরকারের আছে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘আওয়ামী লীগ শৃঙ্খলা ভঙ্গ করে কাউকে পুলিশ, সেনা, র্যাব বা প্রশাসনের বড় পদে বসায়নি। ৮ জনকে পাশ কাটিয়ে ৯ নম্বর ব্যক্তি মঈন উদ্দিনকেকে সেনাপ্রধান কে বানিয়েছে? বেগম খালেদা জিয়া। সাবেক আইজিপি শামসুল হুদা, এসপি কোহিনুর কার সৃষ্টি? মির্জা ফখরুল ভুলে গেছেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত প্রধান অস্ত্র মামলায় ১০ বছর, অর্থ পাচারে আজকে পলাতক আসামি।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে-বিদেশে একজন সৎ রাজনৈতিক হিসেবে পরিচিত। তার সততা নিয়ে প্রশ্ন তোলার কোনো অবকাশ নেই। বিএনপির প্রধান খালেদা জিয়া দুর্নীতির দায়ের সাজাপ্রাপ্ত। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদারতায় সাজা স্থগিত করে বাসায় বসে চিকিৎসা নিতে পারছেন। আজকে সেই বিএনপি দুর্নীতি ও অর্থ পাচারের বিরুদ্ধে কথা বলে।’
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বিএনপি হচ্ছে দুর্বৃত্তের জন্মদাতা। আমাদের দলের নেতৃত্বে কোনো দুর্নীতি থাকলে তথ্য প্রমাণ নিয়ে আসেন। আজকে বিএনপি তাদের দুর্নীতিবাজ পলাতক আসামি তারেক রহমানকে ভালো লোক সাজানোর চেষ্টা করছে।’
সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘টিআইবি আর সুজন ফখরুল-গয়েশ্বর যে সুরে কথা বলে তারাও সেই সুরে কথা বলে। টিআইবি আর সুজন কি বিএনপির- বি টিম? একই সুরে কথা বলে। কোনো পার্থক্য নেই।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দিনরাত কাজ করছেন। ১৫ বছর আগের বাংলাদেশ আর এখনকার বাংলাদেশ আমূল পরিবর্তন। শেখ হাসিনা যেটা করেছেন সেটা হলো উন্নয়ন। যার কোনো তুলনা নেই। পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, চট্টগ্রামে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব কর্ণফুলী টানেল-বাংলাদেশের যে দিকে তাকাই শুধু উন্নয়ন।’
বক্তব্যে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক দলীয় নেতাকর্মীদের শৃঙ্খলা মেনে চলার উপর গুরুত্ব আরোপ করেন। বলেন, ‘কষ্টে থাকলে জানাবেন, অপকর্ম করবেন না। আমাদের নিজের দুর্বলতার খবর শত্রু জানলে নিজেদেরই সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হবে।’
এ সময় দেশের গণতন্ত্রপ্রিয় শিক্ষিত জনগণকে আওয়ামী লীগে যোগদানের আহ্বান জানান দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। বলেন, ‘দেশে আওয়ামী লীগে একমাত্র দল যারা জন্মলগ্ন থেকেই দলের অভ্যন্তরে গণতন্ত্রের চর্চা করে। নিজেদের ভুলত্রুটি সংশোধন করার সৎ সাহস রাখে।’
ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমানের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক এসএম মান্নান কচির সঞ্চালনায় প্রতিনিধি সভায় আরও বক্তব্য দেন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের নেতারা।