২০০৮ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত ১৫ বছরে ২৪টি বড় ব্যাংক কেলেঙ্কারিতে প্রায় ৯২ হাজার ২৬১ কোটি টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্ট্রাল ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)।
আজ সোমবার (১২ আগস্ট) ‘ব্যাংকিং খাতে সুশাসন ফিরিয়ে আনতে করণীয়’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানায় প্রতিষ্ঠানটি।
সিপিডির তথ্য অনুসারে, গত ১৫ বছরে আত্মসাৎ করা অর্থের পরিমাণ ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটের ১২ শতাংশ বা জিডিপির ২ শতাংশের সমান।
সংস্থাটি বলেছে, এ সময়ে মূলত রাজনৈতিক বিবেচনায় ঋণ দেওয়া হয়েছে।
ব্যাংক খাতে স্বচ্ছতা আনতে একটি সুনির্দিষ্ট, সময়োপযোগী, স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও স্বাধীন ব্যাংকিং কমিশন গঠনের সুপারিশ করেছে সিপিডি। পাশাপাশি বারবার খেলাপি ঋণ রিশিডিউল ও ঋণ অবলোপন বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন বলেন, বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে শক্তিশালী করার পাশাপাশি বাংলাদেশ ব্যাংকের স্বাধীনতা সমুন্নত রাখতে হবে এবং সময়মতো তথ্যের সততা ও সহজলভ্যতা নিশ্চিত করতে হবে।
কয়েকটি ব্যাংকের অবস্থা মৃতপ্রায় হলেও সেগুলোকে বেইলআউটের মাধ্যমে বাঁচিয়ে রাখা হয়েছে উল্লেখ করে সিপিডি বলেছে, ধসে পড়ার দ্বারপ্রান্তে চলে যাওয়া ব্যাংকগুলোকে বন্ধ হয়ে যেতে দেওয়া উচিত।
সিপিডি আরও বলেছে, স্বজনতোষী পুঁজিবাদীদের দখলে চলে যাওয়ার পর আগের কয়েকটি ভালো ব্যাংকের পারফরম্যান্স খারাপ হয়ে গেছে। ধসে পড়ার দ্বারপ্রান্তে নয় কিন্তু তারপরও পারফরম্যান্স খারাপ, এমন ব্যাংকগুলোর ব্যবস্থাপনা ও বোর্ড অভ ডিরেক্টরদের সরিয়ে দেওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছে সংস্থাটি।
এছাড়া সংস্থাটি বলেছে, কেন্দ্রীয় ব্যাংক আর্থিক খাতের স্বাস্থ্যের উন্নতি করতে ও আস্থা ফেরাতে দুর্বল ব্যাংককে সবল ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত (মার্জার) করার উদ্যোগ নিয়েছে। এক্ষেত্রে দুর্বল ব্যাংকগুলোর ব্যালান্স শিটের প্রকৃত অবস্থা নির্ণয়ের জন্য যথাযথ অডিট করার পরই কেবল ব্যাংক মার্জার করতে হবে।
দুর্বল ব্যাংকগুলোর পর্ষদ সদস্যদের চরিত্র প্রশ্নবিদ্ধ প্রমাণিত হয়েছে উল্লেখ করে সিপিডি বলেছে, বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর বোর্ড সদস্যদের রাজনৈতিক বিবেচনায় নয়, যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে নিয়োগ দিতে হবে।
প্রতারণামূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত প্রত্যেক ব্যক্তির বিরুদ্ধে তদন্ত করে তাদেরকে শাস্তির আওতায় আনতে হবে বলেও দাবি তুলেছে সংস্থাটি।