টানা দুই দিন বৃষ্টি না হওয়ায় নোয়াখালীর বন্যার পানি কিছুটা কমলেও ফের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও ভারী বৃষ্টিতে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। অনেক জায়গায় ঘরবাড়ি ও সড়ক তলিয়ে গেছে। স্কুলে ঢুকে পড়েছে পানি। দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ খাবার পানির সংকট।
রোববার (২৫ আগস্ট) সকালে আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, সকাল ৬ পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় ৩০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। সক্রিয় মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে ভারী বর্ষণের সম্ভাবনাও রয়েছে।
জানা যায়, নোয়াখালীর চাটখিল, সোনাইমুড়ী, সেনবাগ ও বেগমগঞ্জে রাতে বৃষ্টি ও উজানের পানিতে প্রায় তিন ইঞ্চি পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে নতুন করে সুপেয় পানির সংকট দেখা দিয়েছে। রাতে আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নেওয়া মানুষজন ভোর হওয়ার সাথে সাথে বাড়িঘরে ফিরেছেন।
চাটখিলেন ইয়াসিন চৌধুরী নামের এক বাসিন্দা বলেন, গতকাল বাড়িতে ইটের উপর দিয়ে চলাফেরা করতাম। রাতে পানি ইটের উপরে তিন ইঞ্চি উঠেছে। আমাদের বন্যা পরিস্থিতি অবনতি হচ্ছে। খাবার পানির সংকট রয়েছে। এছাড়াও সাপে কাটা রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
আবুল কালাম আজাদ বলেন, কবিরহাট, কোম্পানীগঞ্জ বাদে বাকি সব উপজেলায় পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। গত দুই দিনের রোদে যা শুকিয়েছে, রাতের বৃষ্টিতে আরো ডাবল বাড়ছে পানি।
মানুষজনের এই মুহূর্তে সুপেয় পানির সংকট দেখা দিয়েছে। অনেকে পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন।
জেলা আবহাওয়া কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, সকাল ৬টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় মাত্র ৪০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। আকাশের পরিস্থিতি মেঘলা রয়েছে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় ভারী বর্ষণ হওয়ার সম্ভাবনা আছে। এতে বৃষ্টির পানি বৃদ্ধি পাবে।
জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান বলেন, সুপেয় পানি পাওয়া ও পানিবাহিত রোগ থেকে মুক্তি আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। সেটি মোকাবিলায় আমরা সজাগ আছি। আমরা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল ও সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মাধ্যমে তা মোকাবিলা করছি। হাসপাতাল গুলোতে চিকিৎসা সহায়তা কার্যক্রম বৃদ্ধি করা হয়েছে। এই ভয়াবহ দুর্যোগ কাটিয়ে উঠতে আমাদের সময়ের প্রয়োজন এবং সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন। এছাড়াও সকলে মিলে বন্যার্তদের পাশে দাঁড়াই। বন্যাদুর্গত এলাকায় সুষমভাবে ত্রাণ বিতরণের লক্ষ্যে জেলা প্রশাসনের সাথে সমন্বয়ের মাধ্যমে ত্রাণ সহায়তায় বিত্তবানদের এগিয়ে আসার জন্য অনুরোধ করা যাচ্ছে।