Thursday, December 5, 2024

সর্বশেষ

তিন দিনের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ১০-১৫ টাকা

নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের বাজারে আবারও অস্বস্তি দেখা দিয়েছে। প্রায় ২০ দিন ধরে আলুর দাম কেজিতে ৫ টাকা ও কোথাও ৭ টাকা বেড়েছে। সেই আলুর দর পেছনে ফেলে মাত্র তিন দিনের ব্যবধানে প্রতি কেজি পেঁয়াজে বেড়েছে ১০ টাকা। খুচরা পর্যায়ে কোথাও ১৫ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। অথচ বাজারে পাতাসহ নতুন পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬০/৭০ টাকা কেজি। ব্যবসায়ীরা দাম বৃদ্ধির কারণ হিসেবে এলসি খুলতে না পারা ও নতুন পেঁয়াজ এলে বাজার পড়ে যাবে যুক্তি দেখাচ্ছেন।

মঙ্গলবার (৫ ডিসেম্বর) রাজধানীর কারওয়ান বাজার ও বিজয় সরণির কলমিলতা কাঁচাবাজারে সরেজমিনে ও শ্যামবাজার এবং দিনাজপুরের হিলিতে মোবাইলে কথা বলে জানা গেছে, বাজারগুলোতে প্রায় কাছাকাছি দামে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে।

কারওয়ান বাজারের পেঁয়াজ, রসুন ব্যবসায়ী মো. আকাশ মল্লিক বলেন, গত তিন দিন ধরে দেশি ও আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজের দাম বেড়েছে কেজিতে ১০/১৫ টাকা। তিন দিন আগে প্রতি পাল্লা (৫ কেজি) ৫৮০ টাকা বিক্রি হতো। বর্তমানে তা ৬৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

পাবনা জেলার সাথিয়া থানা থেকে পেঁয়াজ এনে কারওয়ান বাজারে ব্যবসা করেন মো. আব্দুস সালাম। তিনি বলেন, বাজারে পাবনার পেঁয়াজের কদর বেশি। সেখান থেকে প্রতি মণ পেঁয়াজ ৪ হাজার ৯০০ টাকা থেকে ৫ হাজার ১০০ টাকায় কিনতে হচ্ছে। এক ট্রাকে ২৪০ বস্তা পেঁয়াজ আনা যায়। কেনা থেকে শুরু করে ঢাকা আনা পর্যন্ত ১২৫/১৩০ টাকা ভাড়া দিতে হয় প্রতি বস্তায়। সে হিসাবে ১২৬ টাকা কেনা খরচ পড়ে। ১৩০ টাকার কমে পেঁয়াজ বিক্রি করা যাচ্ছে না।

তিনি বলেন, এবার পুরোটা বছর বাজার এলোমেলো হয়ে গেছে। আমরা বিক্রি করেও শান্তি পাইনি। কাস্টমার কিনেও স্বস্তি পায়নি। এক কেজি সারের দাম বর্তমানে ৪০ টাকা। কৃষকের উৎপাদন খরচ বেড়েছে। বেশি দামে বিক্রি করায় আমাদের কিছু কিছু সময় জরিমানাও দিতে হয়েছে। কী করব কম দামে তো কেনা যায় না।

মো. রুবেল হোসেন ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি করেন। তিনি বলেন, ভারতীয় নতুন ৫৩০ ও বড় জাতের পুরাতন পেঁয়াজ ৫১০ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে।

বাজারটিতে কথা হয় আড়তদার জাহাঙ্গীর হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, চায়না সাদা পেঁয়াজ ৬০ ও লাল পেঁয়াজ ৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ভারতীয় পেঁয়াজ ১০৫/১১০, দেশি ১২৫/১৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, পাবনার পেঁয়াজ ৫/১০ টাকা বেশিতে বিক্রি হয়। বর্তমানে ফরিদপুরের পেঁয়াজ ১২০ টাকা কেজি। কারওয়ান বাজারে ১০টি পেঁয়াজের আড়ত আছে। প্রতিদিন বাজারে ৩/৪ ট্রাক পেঁয়াজ আসে। এক ট্রাকে আমদানি করা পেঁয়াজ সাড়ে ১৪ টন ও দেশি ২০ টন থাকে। বর্তমানে আমরা পেঁয়াজ কম পাচ্ছি।

বাজারে কথা হয় পান্থপথ থেকে বাজার করতে আসা আশিকুর রহমানের সঙ্গে। তিনি এক কেজি পেঁয়াজ, আধা কেজি রসুন, বরবটি, মুলাসহ বিভিন্ন পণ্য কিনেছেন। পেঁয়াজের দাম সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কী বলব বাবা পেঁয়াজের কথা বলতে গেলে মাথা ঘোরায়। এখন নতুন পেঁয়াজ ওঠা শুরু হয়েছে। অথচ ১৩৫ টাকা কেজি দরে এক কেজি পেঁয়াজ কিনেছি। গত সপ্তাহেও এক কেজি পেঁয়াজ কিনেছিলাম ১২০ টাকা দিয়ে। এক সপ্তাহ পর পর বাজার করি। এই অল্প সময়ের মধ্যে ১৫ টাকা বেড়েছে।

কলমিলতা বাজারের বিক্রেতা মো. ইয়াসিন বলেন, ভারতীয় পেঁয়াজ ১২০/১২৫ টাকা ও দেশি পেঁয়াজ ১৩০/১৩৫ টাকায় বিক্রি করছি। একই বাজারের মোতাহার হোসেন ফারুক প্রায় সমান দামে পেঁয়াজ বিক্রি করছেন।

জানতে চাইলে পেঁয়াজ আমদানিকারক ও শ্যামবাজার পেঁয়াজ ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুল মাজেদ বলেন, আগামী ১৫ দিনের মধ্যেই বাজারে প্রচুর পরিমাণে নতুন পেঁয়াজ উঠবে। এজন্য আমদানিকারকরা নতুন করে পেঁয়াজ আনছেন না। নতুন পেঁয়াজ বাজারে এলে দাম ৬০ টাকা কেজিতে হয়ে যাবে।’

হিলি স্থলবন্দরের আমদানি-রপ্তানি গ্রুপের সভাপতি হারুন অর রশীদ বলেন, দুটি কারণে বাজারে পেঁয়াজের সংকট চলছে। একদিকে ব্যাংকগুলো আমদানিকারকদের চাহিদামতো এলসি দিচ্ছে না। এতে করে আমদানিকারকরাও চাহিদামতো পেঁয়াজ আনতে পারছে না। আবার কয়েকদিন পরেই নতুন পেঁয়াজ পাওয়া যাবে। তখন আমদানি করা পেঁয়াজের চাহিদা কমে যাবে।

সর্বশেষ

নির্বাচিত

Stay in touch

To be updated with all the latest news, offers and special announcements.