কক্সবাজারে গহীন পাহাড়ে অস্ত্র তৈরির কারখানার সন্ধান পেয়েছে র্যাব। সেখান থেকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও অস্ত্র তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে। আটক করা হয়েছে চারজনকে।
বুধবার ভোরে রামুর ঈদগড় ইউনিয়নের ছগিরাকাটা তুলাতলী পাহাড়ে এই অস্ত্র কারখানার সন্ধান পাওয়া যায়।
র্যাবের অভিযানকালে আটক করা হয় মাঈন উদ্দিন, জাফর আলম, লাল মিয়া ও সাহাবউদ্দিন নামের চারজনকে। উদ্ধার করা হয় বিপুল পরিমাণ অস্ত্র তৈরির সরঞ্জামসহ ১০টি আগ্নেয়াস্ত্র ও ২২ রাউন্ড গুলি। তবে পালিয়ে যায় কারখানাটির মালিক ও প্রধান অস্ত্র কারিগর মনিরুল হক।
র্যাব-১৫ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এইচএম সাজ্জাদ হোসেন জানান, দীর্ঘদিন ধরে পাহাড়ের দুর্গম এলাকায় কারখানাটি গড়ে তুলে দীর্ঘদিন ধরে আগ্নেয়াস্ত্র তৈরি করে আসছিল একটি চক্র। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে কারখানা থেকে দুজন এবং বসতবাড়ি থেকে দুজনকে আটক করা হয়।
র্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘মনিরুল হকের পৈতৃক পেশা অস্ত্র তৈরি। তার সূত্র ধরেই সে অস্ত্র ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ে। চট্টগ্রাম ও ঢাকা থেকে অস্ত্র তৈরির সরঞ্জাম এনে সহযোগীদের নিয়ে গহীন পাহাড়ে অস্ত্র তৈরি করত সে।’
র্যাবের এই অধিনায়ক বলেন, ‘রোহিঙ্গা ক্যাম্পভিত্তিক সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আরসা, নবী হোসাইন গ্রুপসহ বিভিন্ন ডাকাত, অপহরণের সঙ্গে জড়িত গ্রুপের কাছে অস্ত্র সরবরাহ করত তারা। এর সঙ্গে নির্বাচন সামনে রেখেও আগ্নেয়াস্ত্রের চাহিদা অনেকটা বেড়েছে।’
তিনি জানান, মাঈন উদ্দিন পেশায় একজন পল্লী চিকিৎসক। তিনিই মিডিয়াম্যান হিসেবে কাজ করতেন। মাঈন উদ্দিন এবং জাফর সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর কাছ থেকে ডিমান্ড নিয়ে মনিরুল হককে জানাতেন। তারপর চাহিদা অনুযায়ী এই কারখানায় অস্ত্র তৈরি করে তারা সরবরাহ করত। প্রতিটি অস্ত্রের দাম পড়তো ৩০ থেকে ৫০ হাজার টাকা।
সন্ত্রাস নির্মূল না হওয়া পর্যন্ত এমন অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান লেফটেন্যান্ট কর্নেল এইচএম সাজ্জাদ হোসেন।
অপহরণ ও ডাকাতির মতো অপকর্মের স্পট হিসেবে ঈদগড় সড়ক সবসময় আলোচনায় থাকে। সেখানকার মানুষ আতঙ্কে চলাচল করে সড়কটি দিয়ে। এমন অভিযানকে স্বাগত জানিয়েছেন এলাকাবাসী। তারা চান এমন অভিযান অব্যাহত থাকুক।