কুয়াশায় ঢাকা কনকনে শীতের সকালে গৌরবজ্জল বিজয়ের আরেকটি বছর বরণ করল বাঙালি জাতি। শীত উপেক্ষা করেই মহান বিজয় দিবসে লাখো মানুষের ঢল নেমেছে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধ এলাকায়।
যাদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে বাঙালি পেয়েছিল স্বাধীন দেশ, সেই শহীদদের স্মরণে শনিবার (১৬ ডিসেম্বর) প্রথম প্রহরেই জেগে উঠে স্মৃতিসৌধ এলাকা। ভোর থেকেই লাখো মানুষ হাজির হন স্মৃতিসৌধ এলাকায়। শ্রদ্ধার ফুলে তারা স্মরণ করছেন দেশের স্বাধীনতার জন্য জীবন বিলিয়ে দেওয়া বীর শহীদদের।
শনিবার সকালে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শ্রদ্ধা জানানোর মধ্য দিয়ে বিজয়ের ৫৩ বছর পূর্তির দিনটির কর্মসূচি শুরু হয়। জাতীয় স্মৃতিসৌধে প্রথমে রাষ্ট্রপতি পরে প্রধানমন্ত্রী শ্রদ্ধা জানান। এ সময় তিন বাহিনীর একটি চৌকস দল সালাম জানায়। শহীদদের স্মরণে বিউগলে বাজানো হয় করুণ সুর। কিছুটা সময় নীরবে দাঁড়িয়ে জাতির বীর সন্তানদের স্মরণ করেন রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধান।
শহীদ বেদী ভরে ওঠে ফুলে ফুলে। লাল-সবুজের পতাকায় ছেয়ে যায় সৌধ প্রাঙ্গণ। মানুষের হাতে হাতে ফুল আর পরনে ছিল লাল সবুজের ছোঁয়া। সারিবদ্ধভাবে একে একে শ্রদ্ধা জানাতে থাকেন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা। মুহুর্তেই স্মৃতিসৌধ এলাকা পরিণত হয় জনসমুদ্রে। বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে ওঠে স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণ। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে জনতার ভিড়। চারদিক থেকে মানুষের ঢল গিয়ে মিশতে থাকে স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণে।
এ সময় স্থানীয় প্রশাসন, পুলিশ, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বিশ্ববিদ্যালয়, প্রেসক্লাব, সামাজিক সংগঠনের পক্ষ থেকে এবং সব বয়সী মানুষকে স্মৃতিসৌধের বেদীতে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে দেখা যায়।
জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা আর ভালোবাসা নিবেদনে স্মৃতিসৌধের শহীদ বেদীতে ফুল দিচ্ছেন লাখো আবালবৃদ্ধবণিতা। হাজারো মানুষের আনন্দ আর উচ্ছ্বাসে স্মৃতিসৌধ এলাকা উৎসবের নগরীতে পরিণত হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানের গাড়িবহর বের হওয়ার পরই স্মৃতিসৌধ এলাকায় লাখো মানুষ ফুল হাতে প্রবেশ করেন। বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ বেদিতে ফুল দিচ্ছেন। শহীদদের প্রতি তাদের শ্রদ্ধা, ভালোবাসা, আবেগ জানাচ্ছেন।
দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে সাধারণ মানুষ শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য আসায় জাতীয় স্মৃতিসৌধ এলাকায় নেওয়া হয়েছে নিরাপত্তার কঠোর ব্যবস্থা।