কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়া নিয়মিত চালু না রাখার অভিযোগ উঠেছে ক্যাফেটেরিয়া পরিচালকের বিরুদ্ধে। শিক্ষার্থীদের কথা না ভেবে নিজের সুবিধা মতো ক্যাফেটেরিয়া বন্ধ রাখায় দুর্ভোগ পোহাতে হয় আবাসিক হলে থাকা শিক্ষার্থীদের।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অবগত থাকলেও ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা।
কুবির আবাসিক শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে জানান, ক্যাফেটেরিয়া বন্ধ রাখার বিধান না থাকলেও সপ্তাহে প্রতি শুক্রবার দুপুরের পর থেকে শনিবার পর্যন্ত পরিচালক মান্নু ক্যাফেটেরিয়া বন্ধ রাখেন। এতে বাধ্য হয়ে খাবারের জন্য বাইরের হোটেলগুলোর দিকে ঝুঁকতে হয় শিক্ষার্থীদের।
যার ফলে অতিরিক্ত সময় এবং অর্থ ব্যয় হয় বলে জানান তারা। এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে অনেক সময় উচ্চ মূল্যে নিম্নমানের খাবার পরিবেশনের অভিযোগ আছে বাইরের হোটেল মালিকদের বিরুদ্ধে।
এ ছাড়াও পচা, বাসি ও মানহীন খাবার পরিবেশন, পোড়া তেলে পচা মাছ ভাজা, নিম্নমানের চাল, পোকা খাওয়া সবজি ও বাসি তরকারিসহ খাবারের প্লেটে পোকা-মাকড় পাওয়ার অভিযোগ রয়েছে ক্যাফেটেরিয়া পরিচালক মান্নুর বিরুদ্ধে।
এসব বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বঙ্গবন্ধু হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ফারহান বলেন, ‘ক্যাফেটেরিয়ার নানান সমস্যার বিষয়ে আমরা অনেক আগে থেকে বলে আসছি অথচ এ বিষয়ে প্রশাসনের কার্যকরী ভূমিকা নিতে দেখা যায় না। আমরা বেশির ভাগ শিক্ষার্থীরা ক্যাফেটেরিয়ার খাবারের উপর নির্ভর করতে হয়। এভাবে যদি তাদের খেয়াল খুশি মতো ক্যাফেটেরিয়া বন্ধ রাখে দিনশেষে আমাদেরকে দুর্ভোগ পোহাতে হয়। শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে শনিবারেও খোলা রাখার জন্য কর্তৃপক্ষের নিকট আহ্বান জানাচ্ছি।’
নিয়মিত ক্যাফেটেরিয়ায় খাবার খায় এমন আরেক শিক্ষার্থী তাওহীদুল ইসলাম বলেন, ‘কখনো খাবারে চুল, পোকা, বাসি খাবারও পরিবেশন করছে এ ক্যাফেটেরিয়ার পরিচালক। অস্বাস্থ্যকর খাবারের পরিবেশ কখনো শিক্ষাঙ্গনের পরিবেশের অংশ হতে পারে না। যা শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি করে। প্রশাসনের উচিত এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া।’
বন্ধ রাখার বিষয় জানতে চাইলে ক্যাফেটেরিয়ার পরিচালক মান্নু মজুমদার বলেন, ‘এটা নতুন কী? এটা অনেক আগে থেকে এভাবে পরিচালনা করে আসছি। শনিবারে ক্লাস না থাকায় শিক্ষার্থীদের খাবারের চাহিদা অনেক কম থাকে। দেশের দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে ক্যাফেটেরিয়া খোলা রাখলে লোকসান হয়। তাই আমি শনিবারের বন্ধ রাখি। এ বিষয়ে প্রশাসন অবগত আছে।’
শনিবারে ক্লাস না থাকায় শিক্ষার্থীদের চাপ কম থাকলেও পাঁচ আবাসিক হলের শিক্ষার্থীর একটা অংশ এ ক্যাফেটেরিয়ার উপর নির্ভর করে থাকে। এমতাবস্থায় ক্যাফেটেরিয়া বন্ধ রাখাটা স্বাভাবিকভাবে দেখছেন না শিক্ষার্থীরা।
বন্ধের বিষয়ে কর্তৃপক্ষের অবগত আছে কিনা জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র পরামর্শক ও নির্দেশনা কার্যালয়ের পরিচালক অধ্যাপক ড. হাবিবুর রহমান বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি অবগত আছি। শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে আমি মান্নুকে বলে দিব যেন শনিবারে ক্যাফেটেরিয়া খোলা রাখে।’
এ কথা বলার পরও এ শনিবার আসলেও আগের চিত্র দেখা গেছে, বরাবরের মতই তালা ঝুলছে কুবির ক্যাফেটারিয়া।