বছরের শেষ মাস ডিসেম্বরেও রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয়ে ঊর্ধ্বমুখী ধারা দেখা যাচ্ছে। এর আগে নভেম্বর মাসে প্রায় ২ বিলিয়ন (২০০ কোটি) ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা।
অক্টোবরে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৯৭ কোটি ৭৫ লাখ (১ দশমিক ৯৮ বিলিয়ন) ডলার। পরের মাস নভেম্বরে আসে ১৯৩ কোটি (১ দশমিক ৯৩ বিলিয়ন) ডলার। আশা করা হচ্ছে, ডিসেম্বরে ২ বিলিয়ন ডলারের বেশি রেমিট্যান্স দেশে আসবে।
বাংলাদেশ ব্যাংক রোববার রেমিট্যান্স প্রবাহের সাপ্তাহিক যে তথ্য প্রকাশ করেছে তাতে দেখা যায়, ২০২৩ সালের শেষ মাস ডিসেম্বরের প্রথম ২২ দিনে ১৫৬ কোটি ৯৪ লাখ ৮০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স দেশে এসেছে। প্রতিদিনের গড় হিসাবে এসেছে ৭ কোটি ১৩ লাখ ডলার।
মাসের বাকি ৯ দিনে (২৩ থেকে ৩১ ডিসেম্বর) এই হারে রেমিট্যান্স এলে মাস শেষে পরিমাণটা ২ দশমিক ২১ বিলিয়ন (২২১ কোটি ১৫ লাখ) ডলারে গিয়ে দাঁড়াবে। আর সেটি হলে ছয় মাসের মধ্যে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স আসবে ডিসেম্বরে। গত জুনে দেশে রেমিট্যান্স এসেছিল ২ দশমিক ২০ বিলিয়ন ডলার।
গত বছরের ডিসেম্বরে এসেছিল ১৬৯ কোটি ৯৭ লাখ ডলার রেমিট্যান্স। প্রতিদিনের গড় হিসাবে তা ছিল ৫ কোটি ৪৮ লাখ ডলার। চলতি বছরের নভেম্বরে রেমিট্যান্স ছিল গত বছরের একই মাসের চেয়ে ২১ শতাংশ বেশি।
২০২২ সালের নভেম্বরে ১৫৯ কোটি ৫২ লাখ (১ দশমিক ৫৯ বিলিয়ন) প্রবাসী আয় দেশে আসে। অক্টোবরে প্রতিদিনের গড় হিসাবে এসেছিল ৬ কোটি ৩৫ লাখ ডলার। আর নভেম্বরে এসেছিল ৬ কোটি ৪৩ লাখ ডলার।
ব্যাংকগুলোর আড়াই শতাংশ বাড়তি প্রণোদনায় প্রবাসী আয় বাড়ছে বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদ ও ব্যাংকাররা। এ ছাড়া অনেক ব্যাংক বেঁধে দেয়া দামের চেয়ে বেশি দামে রেমিট্যান্স সংগ্রহ করায় প্রবাসী আয় বাড়ছে বলে জানিয়েছেন তারা।
গত সেপ্টেম্বরে ১৩৩ দশমিক ৪৪ কোটি (১ দশমিক ৩৩ বিলিয়ন) ডলারের রেমিট্যান্স পাঠান প্রবাসীরা। একক মাসের হিসাবে এটা ছিল সাড়ে তিন বছরের মধ্যে সবচেয়ে কম।
২০২০ সালের প্রথম দিকে বিভিন্ন দেশের মতো বাংলাদেশেও করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। দেশে দেশে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। শুরু হয় লকডাউন।
করোনা মহামারিতে কমতে শুরু করে রেমিট্যান্স। সেই ধাক্কায় ২০২০ সালের মার্চে রেমিট্যান্স ১২৭ কোটি ৬২ লাখ ডলারে নেমে আসে। এপ্রিলে তা আরও কমে ১০৯ কোটি ২৯ লাখ ডলারে নেমে যায়। এরপর থেকে অবশ্য রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়তে থাকে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যে দেখা যায়, ডিসেম্বরের ২২ দিনে বেসরকারি ৪৩ ব্যাংকের মাধ্যমে ১৩৭ কোটি ১৯ লাখ ১০ হাজার ডলারের প্রবাসী আয় দেশে এসেছে। রাষ্ট্র মালিকানাধীন ছয় বাণিজ্যিক ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ১৩ কোটি ৮৫ লাখ ২০ হাজার ডলার। বিশেষায়িত কৃষি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ৫ কোটি ৪৭ লাখ ২০ হাজার ডলার। এর বাইরে ৯ বিদেশি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ৪৩ লাখ ৩০ হাজার ডলার।
চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে ১৯৭ কোটি (১ দশমিক ৯৭ বিলিয়ন) ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা। দ্বিতীয় মাস আগস্টে আসে ১৬০ কোটি (১ দশমিক ৬ বিলিয়ন) ডলার। আর তৃতীয় মাস সেপ্টেম্বরে রেমিট্যান্স প্রবাহে ধস নামে। এই মাসে আসে ১৩৩ কোটি ৪৩ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স।