চাল, ডাল, গম, পেঁয়াজ, সজনেডাটা, কাঁচামরিচসহ নানা পণ্যের পর ভারত থেকে প্রথমবারের মতো আলু আমদানি করা হচ্ছে। ভরা মৌসুমেও বেশি দামে আলু বিক্রি হওয়ায় সরকার নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যটি আমদানির উদ্যোগ নিয়েছে।
বাজার স্বাভাবিক রাখতে সরকার ৫০ হাজার টন আলু আমদানির অনুমতি দিয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় যশোরের বেনাপোল ও দিনাজপুরের হিলি স্থল বন্দর দিয়ে ভারত থেকে আলু আমদানি শুরু হয়েছে। সে সুবাদে আলুর দাম কেজিতে কমে এসেছে ১০ থেকে ১৫ টাকা।
শনিবার বিকেল ৩টার দিকে আলু নিয়ে একটি ট্রাক প্রবেশের মাধ্যমে হিলি দিয়ে আমদানি কার্যক্রম শুরু হয়। হিলির ৫০ জন আমদানিকারক ৩৫ হাজার টন আলু আমদানির অনুমতি পেয়েছেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে তিনটি ট্রাকে ৭৪ দশমিক ১ টন আলু ভারত থেকে বেনাপোল বন্দরে আসে। শনিবার চালানটি বন্দর থেকে ছাড় করা শুরু হয়।
আমদানির সুবাদে দেশের বাজারে এবার আলুর দাম অনেকটা কমে আসবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
হিলি স্থলবন্দরের আমদানিকারক শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘এখন আলুর ভরা মৌসুম। তারপরও দাম বেড়ে খুচরা পর্যায়ে আলু বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়। এ অবস্থায় সরকার সামনে রোজায় বাজার স্বাভাবিক রাখতে আলু আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’
তিনি জানান, শনিবার ভারত থেকে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি শুরু হওয়ায় আলুর দাম কমে বিক্রি হচ্ছে ২৫ থেকে ৩০ টাকায়।
হিলি স্থলবন্দর উদ্ভিদ সংগনিরোধের উপসহকারী কর্মকর্তা মো. ইউসুফ আলী জানান, বাজার নিয়ন্ত্রণে বুধবার আলু আমদানির অনুমোদন দেয় সরকার। ওইদিন থেকেই অনুমতির আবেদন গ্রহণ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে আইপি দেয়া শুরু হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় শনিবার ভারত থেকে আলু আমদানি শুরু হয়েছে।
দিনাজপুর হিলি স্থলবন্দরে আমদানি-রপ্তানিকারক এসোসিয়েশনের সভাপতি হারুনুর রশিদ হারুন শনিবার জানান, হিলি স্থল বন্দরে ৫০ জন আমদানিকারক ৩৫ হাজার টন আলু আমদানির অনুমতি পেয়েছেন। ইতোমধ্যে এলসি খোলাসহ অন্যান্য কার্যক্রম শুরু করেছেন তারা।
এদিকে বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে তিনটি ট্রাকে এক হাজার ৪৮০ বস্তায় ৭৪ দশমিক ১ টন আলু ভারত থেকে বেনাপোল বন্দরে আসে। শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটি থাকায় আলুর চালানটি বন্দর থেকে খালাস করা সম্ভব হয়নি। শনিবার বন্দর থেকে চালানটি ছাড় করা শুরু হয়।
এসব আলুর আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান ইন্টিগ্রেটেড ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেড বাংলাদেশ এবং রপ্তানিকারক পেপসিকো ইন্ডিয়া হোল্ডিংস, ভারত।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত নেয়ার পর ৭৭টি আবেদনের বিপরীতে সরকার ১২ জন আমদানিকারককে ভারত থেকে প্রায় ৫০ হাজার টন আলু আমদানির অনুমতি দেয়।
কাস্টমস সূত্রে জানা গেছে, প্রতি টন আলু ১৮০ ডলারে শুল্কায়ন করা হচ্ছে। সে হিসাবে প্রতি টন আলুর শুল্ক ৬ হাজার ৬৮৯ টাকা ৫০ পয়সা। সে হিসাবে প্রতি কেজি আলুতে শুল্ক দিতে হচ্ছে ৬ টাকা ৭০ পয়সা। আলু কেনা, এলসি খরচ ও শুল্কসহ প্রতি কেজি আলুতে আমদানিকারকের খরচ পড়ছে প্রায় ২৯ টাকা। ফলে তা বাজারে ৩০ থেকে ৩২ টাকা কেজি দরে সরবরাহ করা সম্ভব।