শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোকে পরিবেশবান্ধব করে গড়ে তোলার তাগিদ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘আমাদের শিল্প গড়তে হবে। একই সঙ্গে শিল্প বর্জ্য ব্যবস্থাপনাও করতে হবে। শিল্প প্রতিষ্ঠান হবে পরিকল্পিত, পরিবেশবান্ধব এবং স্বাস্থ্যসম্মত।’
বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে রোববার সকালে জাতীয় এসএমই পণ্যমেলা-২০২৪-এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘শিল্প খাত একান্তভাবে পরিবেশবান্ধব হওয়া উচিত। যারা যেখানে শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলবেন, অবশ্যই লক্ষ রাখবেন যেন শিল্পের বর্জ্য নদীতে না পড়ে। আমাদের পানি যেন কোনো রকম দূষিত না হয়। আমাদের দেশ ভৌগোলিক সীমারেখায় অত্যন্ত ছোট, কিন্তু জনসংখ্যার দিক থেকে বড়।
‘সে ক্ষেত্রে আমাদের দেশের পরিবেশ এবং সবকিছু পরিকল্পিতভাবে হওয়া উচিত। স্বাস্থ্যসম্মত হওয়া উচিত। শিল্প আমাদের গড়ে তুলতে হবে। শিল্প বর্জ্য ব্যবস্থাপনা অবশ্যই সকলকে করতে হবে। সামান্য একটু কেমিক্যালের পয়সা বাঁচাতে গিয়ে দেশের সর্বনাশ এবং নিজের সর্বনাশ করবেন না।’
শেখ হাসিনা শিল্প মালিকদের উদ্দেশে বলেন, ‘শ্রমিকদের কর্মপরিবেশ সৃষ্টি এবং জীবনমান নিশ্চিত করতে হবে। তাহলে তাদের আস্থা-বিশ্বাস অর্জন করে আরও বেশি কাজ আদায় করে নিতে পারবেন।’
সরকারপ্রধান আক্ষেপ করে বলেন, ‘ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ এবং মহামারি করোনার কারণে সমস্ত কাজ বন্ধ, রপ্তানি বন্ধ, আমদানি বন্ধ সারা বিশ্বের অর্থনীতিতে মূল্যস্ফীতি এবং নানা রকম সমস্যার সৃষ্টি করেছে। বাংলাদেশেও এ ধাক্কাটা এসে পড়েছে। এর সাথে যুক্ত আছে ফিলিস্তিনে ইহুদিদের যুদ্ধ।
‘বিদেশ থেকে যে পণ্যগুলো আমদানি করতে হয়, তার প্রত্যেকটার দাম বেড়েছে, যার একটা প্রভাব আমাদের দেশে পড়ছে। মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধি পেয়েছে।’
সরকার এটাকে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এটা শুধু তখনই করতে পারব, যখন আমরা নিজস্ব উৎপাদন বাড়াতে পারব।’
বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, ‘১৯৭৪ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সমুদ্রসীমা আইন করে যান। যারা পঁচাত্তরের পর ক্ষমতায় এসেছিল—জিয়াউর রহমান, এরশাদ, খালেদা জিয়া, আমাদের যে সমুদ্রসীমা অধিকার আছে, তা তাদের মুখে কোনোদিনই উচ্চারণ হয়নি। তা শুনি নাই। প্রথমবার এসেই উদ্যোগ নিয়েছিলাম।’
বক্তব্য শেষে প্রধানমন্ত্রী একাদশ জাতীয় ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (এসএমই) পণ্যমেলার উদ্বোধন ঘোষণা করেন।
সাত দিনব্যাপী এ মেলা চলবে ২৫ মে পর্যন্ত। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত ক্রেতা-বিক্রেতা ও দর্শনার্থীদের জন্য মেলা উন্মুক্ত থাকবে।
শুধু দেশীয় উদ্যোক্তাদের তৈরি করা পণ্য নিয়ে শিল্প মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় এসএমই ফাউন্ডেশন মেলার আয়োজন করেছে। এতে ৩৫০টির বেশি ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পপ্রতিষ্ঠান অংশ নেবে, যার ৬০ শতাংশ নারী উদ্যোক্তাদের।
শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন শিল্প মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব জাকিয়া সুলতানা, বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশনের (এফবিসিসিআই) সভাপতি মো. মাহবুবুল আলম, এসএমই ফাউন্ডেশনের নতুন চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. মাসুদুর রহমানসহ সংশ্লিষ্টরা।