ঢাকার সাভারের আশুলিয়ায় ডিইপিজেডসহ অধিকাংশ তৈরি পোশাক কারখানা সচল থাকলেও অস্থিরতা ও অস্থিতিশীল পরিস্থিতির মুখে অন্তত ২২টি কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ।
আরও আটি পোশাক কারখানায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েনসহ নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।
আশুলিয়া শিল্প পুলিশ-১-এর পুলিশ সুপার সারোয়ার আলম বুধবার সকালে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে শিল্পাঞ্চল আশুলিয়ায় শ্রমিকদের দাবির মুখে অস্থিতিশীল অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। তাই শিল্প সুরক্ষায় কারখানা শ্রম আইন ২০০৬ সালের ১৩ (ক) ধারায় আশুলিয়ার অন্তত ২২টি পোশাক কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। আর এ ধারায় কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হলে শ্রমিকরা বন্ধ সময়কালীন কোনো বেতন পাবেন না।
শিল্পাঞ্চল ঘুরে দেখা যায়, সকাল আটটা থেকে ১০টা পর্যন্ত টঙ্গী-আশুলিয়া-ইপিজেড সড়কের বাইপাইল থেকে জিরাবো, নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়ক ও বিশমাইল-জিরাবো এলাকার অনন্ত, মেডলার, শারমিন গ্রুপ, হামীম গ্রুপ, ডেকো, এস টুয়েন্টি ওয়ান, মন্ডল নীটওয়্যার লিমিটেড, ম্যাংঙ্গো টেক্স, এআর জিন্স, এনভয়, স্টাইলিং গ্রুপ, ভিনটেক্স, ইয়াগী বাংলাদেশ, ক্রস ওয়ার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, অরোনিমা, ডেবনিয়ার, দি রোজ, জেনারেশন নেক্সট, সিনসিন, ডিসান সোয়েটার ও সিগমা ফ্যাশনসহ আরও বেশ কিছু পোশাক কারখানা শ্রম আইন ২০২৬ সালের ১৩ (ক) ধারা অনুযায়ী বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এ ছাড়া অস্থিতিশীল পরিস্থিতির মুখে আরও আটটি কারখানায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।
সকাল ১০টা পর্যন্ত নিউএইজ, আল মুসলিম, নাসা সুপার কমপ্লায়েন্স, নাসা এজে সুপার, নাসা বেসিক কমপ্লেক্স ও জনরন সোয়েটারের উৎপাদন চলার খবর পাওয়া যায়।
হা-মীম গ্রুপের একটি কারখানা বন্ধের নোটিশে লেখা রয়েছে, ‘দ্যাটস ইট স্পোর্টস ওয়ার লিমিটেড, এ্যাপারেল্স গ্যালারি লিমিটেড, রিফাত গার্মেন্টস লিমিটেড, এক্সপ্রেস ওয়াশিং এন্ড ডাইং লিমিটেড, আটিস্টিক ডিজাইন লিমিটেড, নেক্সট কালেকশন লিমিটেডের সকল কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শ্রমিকবৃন্দের সদয় অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, আশুলিয়া শিল্প অঞ্চলে বর্তমান সহিংসতা ও অস্থিতিশীল পরিস্থিতি বিবেচনায় শ্রমিক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সার্বিক নিরাপত্তার স্বার্থে বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ এর ধারা ১৩ (১) অনুযায়ী কর্তৃপক্ষ আগামী ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ইং তারিখ হইতে অনির্দিষ্টকালের জন্য কারখানা বন্ধ ঘোষণা করল।
‘পরবর্তীতে আঞ্চলিক পরিবেশ নিরাপদ হলে শ্রমিক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের কর্মপরিবেশ ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করে নোটিশের মাধ্যমে কারখানা খোলার তারিখ জানিয়ে দেয়া হবে। কারখানায় নিরাপত্তা বিভাগ অত্র নোটিশের আওতামুক্ত থাকবে।’
শিল্প পুলিশ জানায়, শ্রমিকদের বিভিন্ন দাবির মুখে কিছু কারখানার মালিকপক্ষ আলোচনা করলেও কোনো ধরনের সিদ্ধান্তে যেতে পারেনি। ফলে আজ সেসব কারখানা ১৩ (ক) ধারায় অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছ কর্তৃপক্ষ। এখন পর্যন্ত সড়কে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা বা সড়ক অবরোধের খবর পাওয়া যায়নি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে শক্ত অবস্থানে রয়েছে সেনাবাহিনী, র্যাব, বিজিবি, জেলা পুলিশ ও শিল্প পুলিশ।
আশুলিয়া শিল্প পুলিশ-১-এর পুলিশ সুপার সারোয়ার আলম বলেন, ‘এখন পর্যন্ত ২২টি কারখানা ১৩ (ক) ধারায় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়া আরও আটটি কারখানায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে, তবে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এখনও ঘটেনি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে যৌথ বাহিনী।’