শিল্পাঞ্চল আশুলিয়ায় টানা কয়েকদিনের শ্রমিক অসন্তোষের ঘটনায় আজও ছোট-বড় মিলিয়ে ২১৯টি পোশাক কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এর মধ্যে ৮৬টি পোশাক কারখানায় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা ও ১৩৩ পোশাক কারখানায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। তবে শ্রমিকদের বিভিন্ন দাবি নিয়ে কারখানার ভেতরেই অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছেন শ্রমিকরা।
বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টার দিকে আশুলিয়া শিল্প পুলিশ-১ এর পুলিশ সুপার সারোয়ার আলম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ কারখানাগুলো হলো ভারচুয়াল বটয়ম, মণ্ডল নীটওয়্যারস লিমিটেড, সিগমা ফ্যাশনস লিমিটেড, হা-মীম গ্রুপ, ক্রশওয়্যার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, জিন্স প্রোডিউসার লিমিটেড, অরুনিমা গ্রুপের অরুনিমা স্পোর্টসওয়্যার লিমিটেড এবং ডিএমসি এ্যাপারেলস লিমিটেড, এস এম নীটওয়্যারস লিমিটেড, আগামী এ্যাপারেলস লিমিটেড, মানতা এ্যাপারেলস লিমিটেডসহ আরও ৭৪টি পোশাক কারখানা।
শ্রমিকরা জানান, টানা ১০ দিনের বেশি সময় ধরে কারখানার ভেতরে ও সড়কে শ্রমিকরা দাবি আদায়ের জন্য বিক্ষোভ ও কর্মবিরতি পালন করছেন। কিন্তু মালিকপক্ষ শ্রমিকদের দাবি নিয়ে টালবাহানা করছে। কিছু কাখানায় আশ্বাস দিয়েও পরে শ্রমিকদের দাবি মেনে নেওয়া হয়নি। এতে শ্রমিকদের ক্ষোভ আরও বেড়ে যায়। এছাড়া যেসব কারখানাগুলো অনির্দিষ্টকালের জন্য ছুটি ঘোষণা করেছে, তাদের মধ্যে বেশিরভাগ কারখানায় গত মাসের শ্রমিকদের বেতন পরিশোধ করেনি।
তারা আরও বলেন, বুধবার থেকে কিছু কারখানায় ১৩ (১) অনির্দিষ্টকালের জন্য ছুটি ঘোষণা করে। এছাড়া কিছু কারখানার শ্রমিকরা সকালে কাজে যোগ দিয়ে উৎপাদন শুরু করলেও পরে আবার সাধারণ ছুটি দেওয়া হয়। আজও অনেকে কারখানায় গিয়ে গেটে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধের নোটিশ দেখেন।
বাংলাদেশ গার্মেন্টস ও সোয়েটার্স শ্রমিক টেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের আইন বিষয়ক সম্পাদক খায়রুল মামুন মিন্টু বলেন, গতকালের চেয়ে আজ কারখানা বন্ধের সংখ্যা বাড়ছে। এতে করে শ্রমিক অসন্তোষের মাত্রা আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে। মালিক শ্রমিকের আলোচনার কোনো পথ হচ্ছে না। অনির্দিষ্টকালের জন্য ছুটির কারণে শ্রমিকরা বাসায় অবস্থান করছে আর মালিকপক্ষ অফিসে। শ্রমিকদের দাবি নিয়ে পর্যাপ্ত আলোচনা না হওয়ায় শ্রমিক অসন্তোষ আরও দীর্ঘ হচ্ছে।
আশুলিয়া শিল্প পুলিশ-১ এর পুলিশ সুপার সারোয়ার আলম বলেন, আশুলিয়ায় ৮৬টি কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ও ১৩৩টি কারখানা সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে। তবে কোথাও বিশৃঙ্খলার খবর পাওয়া যায়নি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ ও সেনাবাহিনী কাজ করছে বলেও জানান তিনি।