গত কয়েকদিনের ধারাবাহিকতায় ঢাকার আশুলিয়া শিল্পাঞ্চলে আজও (১৮ সেপ্টেম্বর) অধিকাংশ পোশাক কারখানা খোলা রয়েছে এবং শান্তিপূর্ণভাবে কাজ করছেন শ্রমিকরা।
কিন্তু কয়েকটি কারখানার শ্রমিকরা কাজে যোগ দিলেও বিভিন্ন দাবি আদায়ে মালিকপক্ষের সঙ্গে আলোচনার জন্য কাজ না করে বসে আছেন বলে জানা গেছে। তবে এ ধরনের কারখানার সংখ্যা খুবই কম।
এদিকে চলতি সপ্তাহে নতুন করে কোন কারখানা বন্ধ ঘোষণার তথ্য পাওয়া না গেলেও এই অঞ্চলে ২০টি কারখানা এখনো বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ এর ১৩(১) ধারায় বন্ধ রয়েছে। এছাড়াও সাধারণ ছুটি রয়েছে ৫টি কারখানায়।
শ্রম আইন ২০০৬ এর ১৩(১) ধারায় বলা আছে, কোন প্রতিষ্ঠানের কোন শাখা বা বিভাগে বেআইনি ধর্মঘটের কারণে মালিক উক্ত শাখা বা প্রতিষ্ঠান আংশিক বা সম্পূর্ণ বন্ধ করে দিতে পারবেন এবং এক্ষেত্রে ধর্মঘটে অংশগ্রহণকারী শ্রমিকরা কোন বেতন পাবেন না।
এসব কারখানার অধিকাংশ শ্রমিক অসন্তোষ চলাকালীন গত সপ্তাহের বিভিন্ন সময় বন্ধ ঘোষণা করা হলেও পরবর্তী সময়ে আর খোলা হয়নি।
শিল্প পুলিশ-১ এর পুলিশ সুপার মো. সারোয়ার আলম টিবিএসকে বলেন, “শ্রম আইনের ১৩ (১) ধারায় ২০টি এবং ৫টি কারখানায় সাধারণ ছুটি রয়েছে। এর বাহিরে শিল্পাঞ্চলের সার্বিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।”
শিল্পাঞ্চলের নিরাপত্তায় বিভিন্ন কারখানার সামনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা মোতায়েন থাকা ছাড়াও যৌথ বাহিনীর টহল কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার সারোয়ার।
তিনি আরও বলেন, “যেসব কারখানা বন্ধ রয়েছে, সেসব কারখানার শ্রমিকরা কারখানার সামনে গিয়ে কারখানা খুলে দেওয়ার দাবিতে কিছুটা হৈচৈ করছেন। আমরা চেষ্টা করছি, বিজিএমইএ ও মালিকপক্ষের সাথে আলোচনা করে যেন কারখানাগুলো দ্রুত খুলে দেওয়া হয়।”
শিল্প সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, কয়েকটি কারখানার ভেতরে শ্রমিকরা বিভিন্ন দাবিতে কাজ বন্ধ করে রেখেছে। তবে সমস্যা সমাধানে সেসব কারখানায় আলোচনা চলছে।
বাংলাদেশ গার্মেন্টস অ্যান্ড সোয়েটার শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের আইন বিষয়ক সম্পাদক খায়রুল মামুন মিন্টু টিবিএসকে বলেন, “শিল্পাঞ্চলের অধিকাংশ কারখানা খুলে দেওয়া হলেও কিছু কারখানা এখনো বন্ধ আছে শ্রম আইনের ১৩(১) ধারায়। যেহেতু পরিস্থিতি উন্নত হয়েছে, তাই আমরা মালিকপক্ষ ও বিজিএমইএকে অনুরোধ করবো এসব কারখানাও খুলে দিতে।”
তিনি আরও বলেন, “তা না হলে এসব বন্ধ কারখানাকে কেন্দ্র করে নতুন করে বিশৃঙ্খলা তৈরির সম্ভাবনা রয়েছে।”
খায়রুল মামুন বলেন, “গতকাল ম্যাসকট এর একজন শ্রমিকের মারা যাওয়ার ঘটনাও ঘটেছে, এটিও কিন্তু একটি উদাহরণ। তাছাড়া, কারখানা বন্ধ রাখা তো কোন সমাধান না। কাজেই কারখানাগুলো খুলে দিয়ে মালিকপক্ষের উচিত শ্রমিকদের সাথে আলোচনা করে সমস্যার সমাধান করা।”