২০২৩ সালে ২ লাখ ২৬ হাজার কোটি টাকা কর ফাঁকি হয়েছে। এই বিপুল পরিমাণ ফাঁকি রোধ করতে পারলে সরকারের রাজস্ব আদায় যেমন বাড়তো, তেমনি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনেও কোন সমস্যা হতো না এনবিআরের। গত ১১ বছরে এই কর ফাঁকির পরিমাণ দ্বিগুণের বেশি হয়েছে। বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) এক গবেষণায় এমন তথ্য উঠে এসেছে ।
সোমবার (২১ এপ্রিল) রাজধানীর ধানমন্ডিতে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) কার্যালয়ে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ‘করপোরেট আয়কর সংস্কার ও কর ন্যায্যতার দৃষ্টিকোণ’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদনটি তুলে ধরা হয়।
মূল প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন সিপিডির জ্যেষ্ঠ গবেষণা সহযোগী তামিম আহমেদ। এর পর সংবাদ ব্রিফিংয়ে গবেষণা প্রতিবেদনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন সিপিডির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম।
গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালে আনুমানিক ২ লাখ ২৬ হাজার ২৩৬ কোটি টাকা কর ফাঁকি হয়েছে। এর মধ্যে করপোরেট কর ফাঁকির পরিমাণই অর্ধেক বা ৫০ শতাংশ। গবেষণায় দেখা গেছে, ২০১১ সালের পর থেকে দেশে কর ফাঁকি আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। ২০১২ সালে কর ফাঁকির পরিমাণ ছিল ৯৬ হাজার ৫০৩ কোটি টাকা, ২০২৩ সালে যা বেড়ে দাঁড়ায় আনুমানিক ২ লাখ ২৬ হাজার কোটি টাকায়। অর্থাৎ ১১ বছরে কর ফাঁকির পরিমাণ বেড়েছে দ্বিগুণেরও বেশি। উচ্চ কর হার, দুর্বল নজরদারি, জটিল আইন-কানুন ও কর ব্যবস্থায় ব্যাপক দুর্নীতিকেই কর ফাঁকির মূল কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ‘কর ন্যায্যতার দৃষ্টিকোণ থেকে ব্যাপক কর ফাঁকি সৎ করদাতাদের নিরুৎসাহিত করে এবং আইনের প্রতি অনুগত নাগরিকদের ওপর করের বোঝা বাড়িয়ে দেয়।’
গবেষণা প্রতিবেদনের বিভিন্ন দিক বিশ্লেষণ করে খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে উত্তরণের প্রক্রিয়ায় থাকা বাংলাদেশের জন্য এই পরিস্থিতি বড় চ্যালেঞ্জ। এলডিসি উত্তরণের পর বহুজাতিক কোম্পানির বিনিয়োগ বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে, যার ফলে কর ফাঁকি ও কর পরিহারের ঝুঁকিও বাড়বে। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সিপিডি প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি কর ব্যবস্থার ডিজিটাল অবকাঠামো উন্নয়ন ও নীতিগত সংস্কারের সুপারিশ করেছে।