মায়ের প্রতি শ্রদ্ধা আর ভালোবাসা প্রকাশ করতে প্রতি বছর মে মাসের দ্বিতীয় রোববার পালন করা হয় ‘বিশ্ব মা দিবস’। সেই হিসেবে আজ ১২ মে রোববার সারা বিশ্বে পালিত হচ্ছে দিবসটি।
জন্ম থেকে মৃত্যু অবধি মানুষের জীবনে যে মধুর শব্দটি আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে থাকে, সেটি হলো মা। মাত্র এক অক্ষরে শব্দটি গঠিত হলেও এর ব্যাপকতা সাগরের চেয়েও বিশাল। এই শব্দের চেয়ে অতি আপন শব্দ আর নেই। জন্মের পর মানুষের মুখে এই শব্দই বেশি উচ্চারিত হয়।
এ পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি সম্মানীয় মানুষ মা। সন্তানের জন্য মায়েদের প্রতি ভালোবাসা প্রকাশের দিনক্ষণের হয়ত প্রয়োজন হয় না, তবু এ দিনটিতে মায়ের জন্য বিশেষ কিছু করেন সন্তানরা, মাকে ধন্যবাদ জানান, ভালোবেসে জড়িয়েও ধরেন।
আধুনিক মা দিবসের প্রচলন হয় যুক্তরাষ্ট্রে। দিবসটির প্রবক্তা আনা মারিয়া রিভস জার্ভিস। তার মা অ্যান মারিয়া রিভস জার্ভিস ছিলেন একজন শান্তিবাদী সমাজকর্মী। তিনি ‘মাদারস ডে ওয়ার্ক ক্লাব’ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
১৯০৫ সালে অ্যান মারা যান। তার মৃত্যুর পর মেয়ে আনা মায়ের স্বপ্ন পূরণে কাজ শুরু করেন। সব মাকে শ্রদ্ধা জানাতে একটি দিবসের প্রচলন করেন।
১৯০৮ সালে পশ্চিম ভার্জিনিয়ার একটি গির্জায় আনা তার মায়ের স্মরণে অনুষ্ঠান করেন। একই বছর যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেস মা দিবসকে স্বীকৃতি দিয়ে সরকারি ছুটি ঘোষণার প্রস্তাব নাকচ করে, তবে তাতে দমে যাননি আনা। তিনি তার চেষ্টা অব্যাহত রাখেন। ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে মা দিবস পালিত হতে থাকে।
অবশেষে আনার প্রচেষ্টা সফল হয়। ১৯১৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট উড্রো উইলসন মে মাসের দ্বিতীয় রোববারকে মা দিবস হিসেবে ঘোষণা করেন। দিনটিকে সরকারি ছুটি হিসেবেও ঘোষণা করা হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের দেখাদেখি পরে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মে মাসের দ্বিতীয় রোববার মা দিবস হিসেবে পালিত হতে থাকে। বর্তমানে বাংলাদেশ, অস্ট্রেলিয়া, ব্রাজিল, কানাডা, চীন, রাশিয়া, জার্মানিসহ শতাধিক দেশে ‘মা দিবস’ পালন করা হয়।