ইসরায়েলি হামলায় গাজায় নিহতের সংখ্যা ২১ হাজার ছাড়িয়েছে। নিহতদের ৭০ শতাংশের বেশি শিশু ও নারী। গাজার স্বাস্থ্য বিভাগ বুধবার (২৭ ডিসেম্বর) এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে।
গাজার স্বাস্থ্য বিভাগের মুখপাত্র আশরাফ আল-কিদরা বলেন, ইসরায়েলি হামলায় গাজায় বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ২১ হাজার ১১০ জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে অন্তত ৫৫ হাজার ২৪৩ জন।
বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় নিহত হয়েছে ১৯৫ জন। একই সময়ে আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে অন্তত ৩২৫ জন।
গাজায় নিহতের পাশাপাশি নিখোঁজ রয়েছে ৭ হাজারের বেশি। নিখোঁজদের মধ্যে ৪ হাজার ৯০০ শিশু ও নারী।
গাজার ২৩ লাখের মধ্যে ১৮ লাখ মানুষ স্থানচ্যুত হয়েছে। চলছে পানি, খাদ্য ও চিকিৎসা সামগ্রীর তীব্র সংকট। আগামী ফেব্রুয়ারির মধ্যে গাজায় মহামারী দেখা দিতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ।
ইসরায়েল ইতোমধ্যে উত্তর গাজা প্রায় নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নিয়েছে। এখন মধ্য ও দক্ষিণ গাজায় হামলার তীব্রতা ও পরিধি বাড়িয়েছে। হামাসকে নির্মূল না করে তারা থামবে বলে ঘোষণা দিয়েছে।
৭ অক্টোবর সীমান্ত বেড়া ভেঙে ও প্যারাস্যুটে করে দক্ষিণ ইসরায়েলে প্রবেশ করে কয়েক হাজার হামাস যোদ্ধা। তাদের নিয়ন্ত্রণে আনতে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) ও পুলিশের প্রায় দুই দিন লেগে যায়। এ সময় হামাসের যোদ্ধারা প্রায় ১ হাজার ২০০ জনকে হত্যা করে। আহত হয় প্রায় পাঁচ হাজার। হামাস ধরে নিয়ে আসে ২৪০ জন।
হামাসের হামলার জবাবে তাৎক্ষণিকভাবে যুদ্ধ ঘোষণা করে গাজায় সর্বাত্মক হামলা শুরু করে ইসরায়ের। এরপর থেকে প্রতি মিনিটি মিনিটে বেঘোরে প্রাণ হারাচ্ছে ফিলিস্তিনিরা।
গাজার পাশাপাশি পশ্চিম তীরেও ইতোমধ্যে ইসরায়েলি হামলায় প্রায় ৩০০ জন প্রাণ হারিয়েছে। আহত হয়েছে আরও কয়েক হাজার। বিন্দ হয়েছে প্রায় পাঁচ হাজার। যুদ্ধ পরিস্থিতিকে কাজে লাগিয়ে পশ্চিম তীরে কয়েক শত ফিলিস্তিনি পরিবারতে উচ্ছেদ করে ইসরায়েলের সেটেলারেরা।
বৃহস্পতিবার ইসরায়েলি হামলা ৮৩ দিনে প্রবেশ করেছে। মঙ্গলবার ইসরায়েলের সেনাপ্রধান বলেছেন, যুদ্ধ আরও কয়েক মাস চলতে পারে। অন্যদিকে দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেছেন, তারা প্রয়োজনে ইরানেও হামলা চালাবে। প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু বলেছেন, সহসা যুদ্ধ শেষ হচ্ছে না।
এ পরিস্থিতিতে যুদ্ধ গাজার বাহিরে পূর্ণরূপে লেবানন, সিরিয়া, ইরাক ও ইরানেও ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
জাতিসংঘসহ বিশ্বের অধিকাংশ দেশ ও সংস্থা অনতিবিলম্বে যুদ্ধ বন্ধের বারবার আহ্বান জানাচ্ছে। কিন্তু ইসরায়েলের প্রধান মিত্র যুক্তরাষ্ট্র এখনো ইসরায়েলকে যুদ্ধ বন্ধ করতে আহ্বান জানায়নি। বরং সর্বাত্মকভাবে ইসরায়েলের পাশে থাকার ঘোষণা বারবার পুনর্ব্যক্ত করেছে ওয়াশিংটন। দফায় দফায় পাঠাচ্ছে গোলা-বারুদের চালান।