মিয়ানমার সেনাবাহিনীর অন্তত ১৫১ সেনা ভারতের মিজোরামের একটি গ্রামে আশ্রয় গ্রহণ করেছেন। আরাকান আর্মি নামের একটি সশস্ত্র গোষ্ঠীর হামলার মুখে শুক্রবার (২৯ ডিসেম্বর) তারা সেখানে আশ্রয় নেন।
ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সীমান্তরক্ষী বাহিনী আসাম রাইফেলস শনিবার এসব তথ্য জানিয়েছে।
জানা গেছে, আশ্রিত মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সদস্যরা অস্ত্রসহ মিজোরামে পালিয়ে আসাম রাইফেলসের সহায়তা চায়। তাদের অনেকে গুরুতর আহত।
মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সদস্যদের গ্রহণ করার পর মিজোরামের লঙতলায় জেলার তুইসেনট্যাঙ গ্রাম থেকে পার্শ্ববর্তী পারভা গ্রামে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সেখানে তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
মিয়ানমারের সেনাদের ফেরত পাঠাতে দেশটির সেনা সরকারের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। কয়েক দিনের মধ্যে তাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
আসাম রাইফেলস বলছে, কয়েক দিন ধরে সীমান্তবর্তী অঞ্চলে মিয়ানমার সেনাবাহিনী (তাতমাদাও) ও বিদ্রোহী আরাকান আর্মির মধ্যে ব্যাপক সংঘাত চলছিল। এ অবস্থায় শুক্রবার তাতমাদাওয়ের ১৫১ জন সেনা মিজোরামে আশ্রয় কামনা করে।
গত নভেম্বরে তাতমাদাওয়ের ১০৪ সেনা সদস্য মিজোরামে আশ্রয় নিয়েছিল। জান্তাবিরোধী গণপ্রতিরক্ষা বাহিনীর (পিডিএফ) হামলার মুখে তারা সেখানে পালিয়ে গিয়েছিল। পরবর্তীতে জান্তা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনার পর তাদের মণিপুর হয়ে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হয়।
আরাকান আর্মি মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যভিত্তিক অত্যন্ত শক্তিশালী ও প্রশিক্ষিত একটি বিদ্রোহী গোষ্ঠী। রাখাইনের পাশাপাশি পার্শ্ববর্তী শান রাজ্যেও তাদের প্রভাব রয়েছে।
২৭ অক্টোবর মিয়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্স আর্মি ও তা’অং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মিকে সঙ্গে নিয়ে তাতমাদাওয়ের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে আরাকান আর্মি। অল্প সময়ের মধ্যে তারা শান রাজ্যের বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সীমান্ত ক্রসিং নিয়ন্ত্রণে নেয়।
শান রাজ্যে যুদ্ধ ঘোষণার দুই সপ্তাহেরও কম সময় পর নিজেদের মূল অঞ্চল আরাকানেও যুদ্ধ ঘোষণা করে আরাকান আর্মি। সেখানেও বেশ সাফল্য দেখিয়েছে তারা।
২০২১ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চিকে ক্ষমতাচ্যুত করে সেনাবাহিনী। এর কয়েক মাসের মধ্যে জান্তাবিরোধী সামরিক জোট পিডিএফ গঠিত হয়। তারা দেশটির পুরোনো বিদ্রোহীদের সঙ্গে মিলে জান্তার বিরুদ্ধে বড় ধরনের সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে। গত ছয় মাসে সেনাবাহিনীর সঙ্গে তাদের সংঘাত বেড়েছে। বেড়েছে তাদের সাফল্যের হার।