কয়েক দিন আগেই ইসরায়েলি ভূখণ্ড লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে ইরান। সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে ইরানের কনস্যুলেটে প্রাণঘাতী হামলার প্রতিশোধ নিতে ইরান সরাসরি ইসরায়েলি ভূখণ্ডে এই হামলা চালায়।
প্রতিশোধমূলক এই হামলার জন্য অনেকেই ইরানকে দোষারোপ করলেও তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান এই হামলার জন্য সরাসরি ইসরায়েলকে দায়ী করেছেন।
তিনি বলেছেন, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর কারণেই ইরান এই হামলা চালিয়েছে। মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) রাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলের ওপর ইরানের প্রথম সরাসরি হামলার জন্য ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু দায়ী বলে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান মঙ্গলবার জানিয়েছেন।
তুর্কি এই প্রেসিডেন্ট নিয়মিতই ইসরায়েল এবং দেশটির নেতৃত্বের সমালোচনা করে থাকেন। টেলিভিশনে করা মন্তব্যে তিনি বলেছেন, ‘গত ১৩ এপ্রিল সন্ধ্যায় আমাদের হৃদয়ে যে উত্তেজনা গ্রাস করেছিল, তার জন্য প্রধান দায়ী হলেন নেতানিয়াহু এবং তার নিষ্ঠুর প্রশাসন।’
প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান বলেন, ‘যারা ইসরায়েলের আগ্রাসী মনোভাব সম্পর্কে কয়েক মাস ধরে নীরব ছিল তারা ইরানের প্রতিশোধমূলক হামলার পরপরই নিন্দা জানিয়েছে। কিন্তু এই ঘটনার জন্য নেতানিয়াহুকেই প্রথমে নিন্দা করা উচিত।’
এরদোয়ান বলেন, গত ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েল সরকার বিভিন্নভাবে উস্কানি সৃষ্টির চেষ্টা করেছে যাতে পুরো অঞ্চলকে আগুনের কুণ্ডলীতে পরিণত করা যায়। ইসরায়েল সরকার দামেস্কে অবস্থিত ইরানের কনস্যুলেট ভবনে হামলা চালিয়েছে, এই হামলার মধ্য দিয়ে তারা আন্তর্জাতিক আইন এবং ভিয়েনা কনভেনশন লঙ্ঘন করেছে এবং একে কেন্দ্র করেই ইরান-ইসরায়েল সংঘাত শুরু হয়েছে।
ইসরায়েলে ইরানের হামলার পর তুরস্ক গত রোববার মধ্যপ্রাচ্যে ‘উত্তেজনা নিরসনের’ আহ্বান জানায়। এসময় আঞ্চলিক যুদ্ধ শুরুর ঝুঁকি রয়েছে বলেও সতর্ক করে দেয় দেশটি।
উল্লেখ্য, সিরিয়ার রাজধানীতে তেহরানের কনস্যুলেটে সাম্প্রতিক হামলার জবাবে শনিবার গভীর রাতে তিন শতাধিক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন দিয়ে ইসরায়েলে হামলা চালায় ইরান। যদিও বেশিরভাগ ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলি ভূখণ্ডে পৌঁছানোর আগেই ধ্বংস করা হয়েছে বলে ইসরায়েল দাবি করেছে, তারপরও উত্তেজনার আরও বৃদ্ধি হতে পারে বলে ব্যাপক উদ্বেগ রয়েছে।
মূলত গত ১ এপ্রিল সিরিয়ায় ইরানের কনস্যুলেটে হামলার প্রতিক্রিয়া হিসাবে ইসরায়েলে রাতারাতি ৩০০টিরও বেশি ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করার কথা জানিয়েছে তেহরান। এর বেশিরভাগই ইরানের অভ্যন্তর থেকে নিক্ষেপ করা হয়।
তবে লক্ষ্যে পৌঁছানোর আগেই অধিকাংশ ক্ষেপণাস্ত্রই ভূপাতিত করে ইসরায়েল, যুক্তরাষ্ট্র এবং তাদের মিত্রবাহিনী।