Friday, May 30, 2025

সর্বশেষ

লক্ষাধিক নতুন রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিতে বাংলাদেশকে অনুরোধ জাতিসংঘের

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে আসা নতুন ১ লাখ ১৩ হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিতে বাংলাদেশের সরকারের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক অঙ্গসংস্থা ইউনাইটেড নেশনন্স রেফিউজি এজেন্সি (ইউএনএইচসিআর)। সোমাবার এই অনুরোধ জানানো হয়েছে।

বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের সহয়াতা প্রদানের লক্ষ্যে গঠিত সরকারি সংস্থা রেফিউজি রিলিফ অ্যান্ড রিপ্যাট্রিশন কমিশনের কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান তুরস্কের রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তাসংস্থা আনাদোলু এ তথ্য জানিয়ে বলেছেন, “গত সপ্তাহে আমাদের চিঠি দিয়েছে ইউএনএইচসিআর। সেখানে মিয়ানমার থেকে উচ্ছেদ হয়ে বাংলাদেশে আসা নুতন প্রায় ১ লাখ ১৩ হাজার রোহিঙ্গাকে আশ্রয় প্রদানের জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে।”

মিজানুর রাহমান জানান, নতুন এই রোহিঙ্গাদের অনেকে বর্তমানে কক্সবাজারের রোহিঙ্গা আশ্রয় শিবিরের আশেপাশে তাঁবু গেড়ে বসবাস করছেন। অনেকে আশ্রয় নিয়েছেন স্কুল এবং মসজিদে।

বাংলাদেশের একটি জাতীয় দৈনিকের বরাত দিয়ে আনাদোলু এজেন্সি জানিয়েছে, নুতন এই ১ লাখ ১৩ হাজার রোহিঙ্গা ২৯ হাজার ৬০৭টি পরিবারের সদস্য। এই পরিবারগুলোর মধ্যে শুধ গত সপ্তাহেই এসেছে ১ হাজার ৪৪৮টি পরিবার। এদের প্রায় সবাই রাখাইন রাজ্যের বাসিন্দা এবং নাফ নদী পেরিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে এসেছেন।

“ইউএনএইচিসিআর নতুন আগত রোহিঙ্গাদের সবাইকে শিবিরে আশ্রয় দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানিয়েছে, তবে আমরা এখনও কোনো উত্তর দিইনি। কারণ আমাদের আশঙ্কা, এভাবে ক্রমাগত রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিতে থাকলে ফের পুনর্বাসনের জন্য তাদের মিয়ানমারে পাঠানোর প্রক্রিয়া আরও জটিল হয়ে উঠবে,” আনাদোলুকে বলেন মিজানুর রহমান।

২০১৭ সালের আগস্ট মাসে বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশের বেশ কয়েকটি পুলিশ স্টেশন ও সেনা ছাউনিতে একযোগে বোমা হামলা ঘটায় সশস্ত্র রোহিঙ্গা গোষ্ঠী আরাকান স্যালভেশন আর্মি (আরসা)। সেই হামলার প্রতিক্রিয়ায় আরাকানের রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে ভয়াবহ অভিযান শুরু করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী।

সেনা সদস্যদের নির্যাতন, হত্যা, ধর্ষণ, লুটপাট, বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগের মুখে টিকতে না পেরে নাফ নদী পেরিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে শুরু করেন হাজার হাজার রোহিঙ্গা। বাংলাদেশের সরকারের পক্ষ থেকে তাদেরকে কক্সবাজারের টেকনাফ জেলার কুতুপালংয়ে আশ্রয় দেওয়া হয়। পরে জাতিসংঘ ও অন্যান্য দাতা সংস্থার পক্ষ থেকে তাদেরকে খাদ্য ও অন্যান্য সহায়তা প্রদান শুরু হয়। তারপর থেকে এখন পর্যন্ত এই ব্যবস্থাই চলে আসছে। বর্তমানে কুতুপালং শরণার্থী শিবিরে বসবাস করছেন ১৫ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা।

এদিকে গত প্রায় এক বছর ধরে রাখাইনে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর সঙ্গে তীব্র সংঘাত চলছে জান্তাবিরোধী সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মির। বর্তমানে রাজধানী সিতওয়ে ব্যতীত রাজ্যের সমস্ত এলাকা, এমনকি বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তও রয়েছে তাদের দখলে। ফলে ফের আরেকবার বাংলাদেশে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের ঢল আসার পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।

সর্বশেষ

নির্বাচিত

Stay in touch

To be updated with all the latest news, offers and special announcements.