Sunday, June 15, 2025

সর্বশেষ

হোলি আর্টিজান মামলা: হাই কোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায়ের অপেক্ষা

গুলশানের হোলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলার ঘটনায় সাত জঙ্গির সাজা কমিয়ে হাই কোর্টের দেওয়া আমৃত্যু কারাদণ্ডের রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি পেলে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে হানিয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন।

রোববার নিজ কার্যালয়ে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “মহামান্য হাই কোর্ট বিভাগ মৃত্যুদণ্ড পরিবর্তন করে তাদেরকে আমৃত্যু জেলে থাকার আদেশ দিয়েছেন। আমরা সেই মূল জাজমেন্টা এখনও পাইনি। জাজমেন্ট পাওয়ার পরে আমরা রাষ্ট্রের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলব, যোগাযোগ করব। পরে উনাদের পরবর্তী সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেব।”

বাংলাদেশের ইতিহাসে ভয়াবহতম জঙ্গি হামলার ঘটনাটি ঘটেছিল ২০১৬ সালের ১ জুলাই গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে। পাঁচ তরুণ জঙ্গি রোজার ঈদের এক সপ্তাহ আগে পিস্তল, সাব মেশিনগান আর ধারালো অস্ত্র হাতে ঢুকে পড়েছিল সেই রেস্তোরাঁয়।

তারা গলা কেটে ও গুলি চালিয়ে ১৭ বিদেশি নাগরিকসহ ২০ জনকে হত্যা করে। হামলা ঠেকাতে গিয়ে নিহত হন দুই পুলিশ কর্মকর্তা। পরে কমান্ডো অভিযানে ওই জঙ্গিদের হত্যা করা হয়।

ওই হামলার ঘটনায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে করা মামলায় রায়ে ২০১৯ সালের ২৭ নভেম্বর ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মজিবুর রহমান রায়ে সাতজনকে সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি ৫০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড করেছিলেন। আরও দুটি ধারায় তাদের কয়েকজনকে দেওয়া হয় বিভিন্ন মেয়াদের কারাদণ্ড।

মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্তরা হলেন- জাহাঙ্গীর হোসেন ওরফে রাজীব গান্ধী, আসলাম হোসেন ওরফে র‌্যাশ, হাদিসুর রহমান, রাকিবুল হাসান রিগ্যান, আব্দুস সবুর খান, শরিফুল ইসলাম ওরফে খালেদ ও মামুনুর রশিদ রিপন।

জিম্মিদের উদ্ধারে কমান্ডো অভিযানে সেনাবাহিনীর সাঁজোয়া যান। গুলশানের হোলি আর্টিজান বেকারিতে হামলার ১১ ঘণ্টা পর এ অভিযান শুরু হয়।

মৃত্যু নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত ফাঁসিতে ঝুলিয়ে তাদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার আদেশ দিয়ে বিচারক তার রায়ে বলেন, হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলার মধ্য দিয়ে আসামিরা ‘জঙ্গিবাদের উন্মত্ততা, নিষ্ঠুরতা ও নৃশংসতার জঘন্য বহিঃপ্রকাশ’ ঘটিয়েছে। সাজার ক্ষেত্রে তারা কোনো অনুকম্পা বা সহানুভূতি পেতে পারে না।

অপরাধে সংশ্লিষ্টতা প্রমাণিত না হওয়ায় এ মামলায় বিচারের মুখোমুখি করা আসামি মিজানুর রহমানকে খালাস দেওয়া হয় রায়ে।

রায় ঘোষণার পর নিয়ম অনুযায়ী মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদনের জন্য মামলার ডেথ রেফারেন্স ওই বছরের ৫ ডিসেম্বর বিচারিক আদালত থেকে হাই কোর্টে আসে। ২০২৩ সালের ৩০ অক্টোবর হাই কোর্টের বিচারপতি সহিদুল করিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের বেঞ্চ ডেথ রেফারেন্সের রায় দেন।

তাতে নিম্ন আদালতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সাত জঙ্গির সাজা পাল্টে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেয় হাই কোর্ট।

ডেথ রেফারেন্স রায়ে সাজা কমানোর যুক্তি দেখাতে গিয়ে গিয়ে বিচারক সন্ত্রাস বিরোধী আইন ২০০৯ এর ৬ ধারা ব্যাখ্যা করেন। এ আইনের ৬(১)(ক)(আ) ধারায় ডেথ রেফারেন্সের রায় ঘোষণা করা হয়েছে।

আমৃত্যু কারাদণ্ড দেওয়ার বিষয়ে বিচারক বলেন, “এ ধারার অপরাধে আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়। কিন্ত বিদেশি নাগরিক হত্যাসহ রাষ্ট্রের দুর্নাম ঘটানোর মতো অপরাধ সংঘটন করায় তাদের আমৃত্যু কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। “যতদিন তাদের স্বাভাবিক মৃত্যু না হবে, ততদিন তারা কারাগারে থাকবেন।”

সে রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি এখনও পাওয়া যায়নি বলে এখনও রাষ্ট্রপক্ষ সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি।

সর্বশেষ

নির্বাচিত

Stay in touch

To be updated with all the latest news, offers and special announcements.