Wednesday, December 4, 2024

সর্বশেষ

ট্রাইব্যুনালে আট মন্ত্রীসহ ১৩ জন

জুলাই-আগস্টের গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া সাবেক ৮ মন্ত্রীসহ ১৩ জনকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়েছে।

আজ সোমবার সকাল ১০টার দিকে তাদের প্রিজন ভ্যানে করে আদালতে হাজির করা হয়। গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা ৪৬ জনের মধ্যে এই প্রথম মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে তাদের ট্রাইব্যুনালে তোলা হলো।

এদিকে একসঙ্গে এত ‘ভিআইপি আসামি’ হাজির করার কারণে ট্রাইব্যুনাল এলাকায় আজ সকাল থেকেই নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। মোতায়েন করা হয়েছে র‍্যাব-পুলিশসহ সাদা পোশাকে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্য। আজ গণহত্যার মামলার তদন্তের সময় বৃদ্ধির জন্য আবেদন জানাবে তদন্ত সংস্থা।

যাদের হাজির করা হয়েছে তারা হলেন- সাবেক মন্ত্রী আনিসুল হক, ফারুক খান, ডা. দীপু মনি, শাজাহান খান, রাশেদ খান মেনন, হাসানুল হক ইনু, জুনাইদ আহমেদ পলক, সালমান এফ রহমান, ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী, কামাল আহমেদ মজুমদার, গোলাম দস্তগীর গাজী, অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক ও সাবেক স্বরাষ্ট্র সচিব জাহাঙ্গীর আলম।

এদিকে অন্য একটি মামলায় রিমান্ডে থাকায় আব্দুর রাজ্জাককে আজ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়নি। এছাড়া শাহজাহান খান অসুস্থ থাকায় প্রথমে আনতে না চাইলেও পরে সবার সঙ্গে তাকেও ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।

তদন্ত সংস্থার আলাদা আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৭ অক্টোবর বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল বেঞ্চ তাদেরকে আদালতে হাজির করার নির্দেশ দেন। অন্য দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

গতকাল রোববার চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম জানান, আসামিরা হাজির হলে তাদের সঙ্গে একজন আইনজীবী ও স্বজন উপস্থিত থাকতে পারবেন। তবে কোনো সাধারণ মানুষ থাকতে পারবেন না।

তিনি বলেন, পুরাতন কোর্ট বিল্ডিংকে নতুন করে ব্যবহারের প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। এখন ইন্টারনেট ও কম্পিউটার সংযোগ বাকি আছে, তাই সোমবারের কার্যক্রম এখানে হবে না। টিনশেড ভবনেই হবে।

তাজুল ইসলাম আরও জানান, যে ৪৬ জনের বিরুদ্ধে প্রথমে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছিল, তাদের মধ্যে ১৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

আর ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা থেকে তদন্ত প্রতিবেদন যেহেতু এক মাসের মধ্যে দেওয়া সম্ভব নয়, তাই সময় বাড়ানো হবে। প্রাথমিকভাবে তাদের বিরুদ্ধে গণহত্যার যেসব তদন্ত প্রতিবেদন রয়েছে সেগুলোর কপি ইতোমধ্যে পাওয়া গেছে। যারা হাজির হবেন এই কপি তাদের কাছে হস্তান্তর করা হবে। অভিযোগ এবং অকাট্য দলিল দুটিই রয়েছে। সেগুলোকে একসঙ্গে করে বিচার উপযোগী করার যে প্রক্রিয়া চলছে, তা আইনের নির্ধারিত গতি অনুযায়ী চলবে।

তিনি আরও জানান, অতীতে এই ট্রাইব্যুনাল যে অবিচারের ইতিহাস তৈরি করেছে তা আর এই ট্রাইব্যুনালে হবে না। এই সরকারের সুবিচার করার সদিচ্ছা আছে। আগের সরকারের সময়ে গুম, খুন এবং বিচারবহির্ভূত হত্যার বিচারও এই ট্রাইব্যুনালে হবে। তবে এখন জুলাই-আগস্টে চলমান গণহত্যার বিচারকে প্রাধান্য দেওয়া হবে।

ইন্টারপোলের মাধ্যমে শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে কিনা সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তার বিরুদ্ধে রেড অ্যালার্ট নোটিশ জারি করা হয়েছে। পরবর্তী সময়ে অপরাধীর বহিঃসমর্পণ চুক্তি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তাকে ফিরিয়ে আনতে সব চেষ্টা করা হবে নিম্ন আদালতের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এই ট্রাইব্যুনালেও পুনরাবৃত্তি হবে কিনা এ বিষয়ে তিনি বলেন, ট্রাইব্যুনালে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা আসতে পারবেন। যথাযথ আইডি কার্ড ছাড়া সাংবাদিকরাও ঢুকতে পারবেন না। তবে মোবাইল ফোন নিয়ে প্রবেশ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।

প্রসঙ্গত, গত ১৭ অক্টোবর শেখ হাসিনাসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারিক কার্যক্রম শুরু হয়।

সর্বশেষ

নির্বাচিত

Stay in touch

To be updated with all the latest news, offers and special announcements.