শীত কমেছে কিছুটা। খসে পড়েছে কুয়াশার ঘোমটা। পাতা ঝরা দিন মনে করিয়ে দিচ্ছে, বসন্ত এসে গেছে। এসেছে বাঙালির ঋতুরাজ।
পলাশ-শিমুলও ফুটছে নিশ্চই কোথাও। কোকিলও ডাকছে কী! সুনামগঞ্জের তাহিরপুর শিমুল বাগানে রীতিমতো পর্যটকদের ভিড় লেগেছে, তবে নগরে এসবের দেখা মেলা ভার। ধুলোময় আর রুক্ষ নগরে বসন্তের এমন রূপ মানুষের কাছে বড় অচেনা।
তবে এ ধূলিধূসর ঋতু কী করে বাঙালির প্রেমের ঋতু হয়ে গেল? গাছপালার মস্তক মুণ্ডিত করে দেয় যে ঋতু, যে কী না চৌচির করে দেয় ফসলের মাঠ- তা নিয়ে এত আদিখ্যেতাই বা কেন?- এসব প্রশ্নের উত্তর পাওয়া কঠিন।
বসন্ত নিয়ে বাঙালির প্রধান কবিদের প্রায় সবাই গেয়েছেন বন্দনাগীত। বসন্ত যখন জাগ্রত দ্বারে তখন রবীন্দ্রনাথের পরামর্শ- ‘আজি খুলিয়ো হৃদয়দল খুলিয়ো’। আর কবি নজরুল লিখেছেন, ‘আসিবে তুমি জানি প্রিয়, আনন্দে বনে বসন্ত এলো’।
কেবল বসন্ত নয়, আজ ভালোবাসারও দিন। গত বছরের মতো এবারও বসন্ত আর ভালোবাসা মিলেমিশে একাকার।
চারদিকে এত হিংসা, এত সংঘাত, রাষ্ট্র থেকে রাষ্ট্রে, সম্প্রদায় থেকে সম্প্রদায়ে, মানুষে-মানুষে ক্রোধ, ঘৃণা আর বিদ্বেষের চর্চা থেকে মুক্তি এনে দিতে পারে কেবল প্রেম আর ভালোবাসা।
তাই ফাগুনের এই রঙিন দিনটা ভালোবাসার হোক, হোক প্রেমের। শিল্পী কবীর সুমনের সঙ্গে গলা মিলিয়ে গাওয়া যেতেই পারে, ‘এই প্রেমহীন সময়ে বলছি তোমায় ভালোবাসি। এই অন্ধকারেই চল জোনাকি ডেকে নিয়ে আসি।’