নতুন বছর আসতেই ইউরোপিয়ান ফুটবলে শুরু হয়ে গিয়েছে শীতকালীন দলবদলের মৌসুম। মৌসুমের মাঝপথে এসে দলগুলো নিজেদের পূর্ব অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে নতুন কিছু মুখ যুক্ত করার সুযোগ পাচ্ছে এই স্বল্প সময়ের ট্রান্সফার উইন্ডোতে। ফুটবল ইতিহাসে বেশকিছু কিংবদন্তি বনে যাওয়া দলবদল হয়েছিল এই ছোট্ট সময়েই। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে নেমানিয়া ভিদিচ, চেলসিতে ইভানোভিচ কিংবা লিভারপুলে ভ্যান ডাইক আর লুইস সুয়ারেজের দলবদল হয়েছিল জানুয়ারি মাসেই।
চলতি বছরের জানুয়ারির ট্রান্সফারে সবার আগে দলবদল ঘটেছে ম্যানচেস্টারের দুই ক্লাবে। ম্যানচেস্টার সিটি রিভারপ্লেট থেকে ২৬ মিলিয়নে দলে টেনেছে আর্জেন্টিনার বিষ্ময়বালক ক্লদিও এচেভেরিকে। যদিও ২০২৪ সালের পুরোটা আর্জেন্টিনার ক্লাবেই পার করবেন তিনি। এক বছর পর যোগ দেবেন ইংলিশ ক্লাবে।
অন্যদিকে দলবদলের শুরুতেই ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড থেকে ৬ মাসের লোন ডিলে জার্মান ক্লাব আইনট্রাখট ফ্রাঙ্কফুর্টে যোগ দিয়েছেন ডনি ভ্যান ডি বিক। ম্যানচেস্টারের এই দুই ক্লাব এই শীতেই আরও কিছু খেলোয়াড় দলে ভেড়াতে বা ছাড়তে পারে।
সিটি মিডফিল্ডার ক্যালভিন ফিলিপ্স দল ছাড়তে পারেন, সিটিজেন্সদের হয়ে তার সময়টা খুব একটা ভাল কাটেনি শুরু থেকেই। লিডস থেকে আসার পর খুব বেশি সময় মাঠেও ছিলেন না। আবার ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড থেকে বিদায় নিতে পারেন রাফায়েল ভারানে এবং জ্যাডন স্যাঞ্চো।
ফরাসি সেন্টারব্যাক রাফায়েল ভারানের সঙ্গে আগামী জুনে তার সঙ্গে চুক্তি শেষ হচ্ছে ইউনাইটেডের। তবে তারা সে চুক্তির পথে হাঁটতে আগ্রহী না। বারবার ইনজুরি আর উচ্চ মজুরি বিবেচনায় এনে তাকে জানুয়ারিতেই ছেড়ে দিতে চায় রেড ডেভিলরা। রিয়াল মাদ্রিদ, বায়ার্ন মিউনিখ ও সৌদি প্রো লিগের একাধিক ক্লাব ৩০ বছরের এই বিশ্বকাপজয়ী ডিফেন্ডারকে পেতে আগ্রহী।
জ্যাডন সাঞ্চোর সমস্যা অন্যরকম। একসময়ে দারুণ আলো ছড়ানো এই ইংলিশ ম্যান গত সেপ্টেম্বরে ম্যানেজার এরিক টেন হ্যাগের সঙ্গে বিবাদে জড়িয়ে পড়েন। এরপর থেকেই একাদশে নেই তিনি।তাকে ধরে রাখতে চায় না ইউনাইটেড। সাঞ্চোও দ্রুত ক্লাব ছাড়তে চান। ৭৩ মিলিয়ন পাউন্ড খরচে বরুশিয়া ডর্টমুন্ড থেকে এসেছিলেন রেড ডেভিল শিবিরে। তার ঠিকানা কোথায় হবে তা অনিশ্চিত।
ট্রান্সফার সিজন মানেই আজকাল এমবাপে, রিয়াল মাদ্রিদ এবং পিএসজির দড়ি টানাটানি। ২০২১ সালে থেকে শুরু হয়ে যা আজও চলমান। ইউরোপিয়ান সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, এবারই হয়তো এমবাপ্পের পিএসজি ছেড়ে রিয়ালে যাওয়ার শেষ সুযোগ। এবার নয়তো আর কখনোই নয়।
ক্রীড়াভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য অ্যাথলেটিক জানিয়েছে, রিয়াল মাদ্রিদ এরই মধ্যে এমবাপ্পেকে পাওয়ার জন্য নতুন করে চেষ্টা শুরু করেছে। তবে এবার ক্লাবটির দৃষ্টিভঙ্গিতে কিছু পরিবর্তনও এসেছে। এমবাপেকে ১৫ দিন সময় বেঁধে দিয়েছে লস ব্লাঙ্কোসরা। যা করার করতে হবে এরমাঝেই।
রিয়ালের এমন কঠোর অবস্থানের কারণও স্পষ্ট। নতুন করে সান্তিয়াগো বার্নাব্যু সংস্কারের পর ক্লাবটি ব্যয় সীমিত করার পথে হাঁটছে। পাশাপাশি মাদ্রিদ নিজেদের বার্ষিক লাভটাও ধরতে চায়। তাই এই মুহূর্তে বড় অঙ্ক খরচ করে এমবাপ্পেকে আনলে অর্থনৈতিকভাবে সমস্যায় পড়তে হতে পারে
গত দলবদলের মতো এবার আলোচনার হাজির নাপোলির ফরোয়ার্ড ভিক্টর ওসিমেন। গত মাসে ইতালিয়ান ক্লাবটির সঙ্গে ২০২৬ পর্যন্ত চুক্তির মেয়াদ বাড়িয়েছেন। তবে ইতালির বেশকিছু গণমাধ্যম বলছে, তাকে বিক্রি করার উদ্দেশে ১২০ মিলিয়ন পাউন্ড রিলিজ ক্লজ ধরেছে নাপোলি। যেটা পেলে তাকে ছেড়েও দিতে পারে ইতালিয়ান চ্যাম্পিয়নরা।