সাফ অনূর্ধ্ব-১৬ নারী ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপে ফাইনাল আগেই নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশের মেয়েরা। আসরে প্রথম ম্যাচে স্বাগতিক নেপালকে ২-০ গোলে হারিয়ে শুভসূচনার পর শক্তিশালী ভারতকে ৩-১ গোলের ব্যবধানে হারিয়ে ফাইনাল নিশ্চিত করে প্রীতি-অর্পিতারা। এবার গ্রুপপর্বের শেষ ম্যাচে ভুটানের জালে গোল উৎসব করেছে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা।
শুক্রবার (৮ মার্চ) কাঠমান্ডুর আনফা কমপ্লেক্সে লিগ পর্বের শেষ ম্যাচে ভুটানকে ৬-০ গোলের ব্যবধানে উড়িয়ে দিয়েছে বাংলাদেশের মেয়েরা। ভুটানের বিপক্ষে প্রথমার্ধে ৩-০ গোলে এগিয়ে ছিল বাংলাদেশ। বিরতির পর আরও তিনটি গোল করে লাল-সবুজের দল জয়ের ধারা অব্যাহত রাখে।
এদিকে টানা তিন জয়ে পূর্ণ ৯ পয়েন্ট সংগ্রহ করে টেবিলের শীর্ষে থেকে ফাইনালে উঠেছে সাইফুল বারী টিটুর শিষ্যরা। উল্টো দিকে তিন ম্যাচে ১৯ গোল হজম করা ভুটান হারল সব ম্যাচেই। ১০ মার্চ এই আনফা কমপ্লেক্সে ফাইনালে ভারতের মুখোমুখি হবে লাল-সবুজের মেয়েরা।
এদিনের ম্যাচে সুযোগ থাকা সত্ত্বেও টুর্নামেন্টের সবচেয়ে দুর্বল প্রতিপক্ষের বিপক্ষে একাদশে কোনো পরিবর্তন করেননি বাংলাদেশ কোচ সাইফুল বারী টিটু। নেপাল ও ভারতের বিপক্ষে আগের দুই ম্যাচের একাদশকেই ভুটানের বিপক্ষে খেলান বাংলাদেশ কোচ। তবে ম্যাচের শুরুটা ছিল বেশ ঢিলেঢালা।
ম্যাচের ১৩ মিনিটে প্রথম গোল পায় বাংলাদেশ। মাঝমাঠ থেকে ফাতেমা আক্তারের ক্রস ঠেকাতে বক্সের সামনে চলে এসেছিলেন ভুটানি গোলরক্ষক কেলজাং ওয়াংমো। গোলরক্ষক বল গ্লাভসে নেওয়ার আগেই হেডে গোল তুলে নেন সুরভী আকন্দ প্রীতি। যা তার টুর্নামেন্টে নিজের চতুর্থ গোল।
এরপর ৩৩ মিনিটে নিজের নাম গোল খাতায় তোলেন প্রথম গোলে অ্যাসিস্টদাতা ফাতেমা। প্রায় ৩৫ গজ দূর থেকে নেওয়া ফাতেমার ফ্রি-কিকে বল ভুটানি গোলরক্ষকের নাগালের বাইরে দিয়ে সোজা জড়ায় জালে। দুই মিনিট পর ফাতেমা গোল করালেন ক্রানুচিং মারমাকে দিয়ে। ফাতেমার মাপা কর্নারে বল পান অরক্ষিত ক্রানুচিং, আলতো টোকায় বল পাঠান জালে।
দ্বিতীয়ার্ধের পরপরই ব্যবধান ৪-০ করেন সাথী মুন্ডা। বাঁ প্রান্ত থেকে বদলি খেলোয়াড় মৌমিতা খাতুনের ক্রস থেকে সুরভীর পা ছুঁয়ে বল যায় পোস্টের মুখে অরক্ষিত সাথীর পায়ে। সহজ সুযোগ কাজে লাগিয়ে ব্যবধান বড় করেন বাংলাদেশি উইঙ্গার। ৬৯ মিনিটে ব্যবধানটা আরও বড় করেন থুইনুই মারমা। মৌমিতা খাতুনের ক্রস ধরে দূর পোস্টে জোরালো শট নেন থুইনুই, বল ভুটান গোলরক্ষককে ফাঁকি দিয়ে জড়ায় জালে।
সুরভী ম্যাচে নিজের দ্বিতীয় গোল তুলে নেন ৭৭ মিনিটে। আরিফা আক্তারের বাড়ানো বলে ভুটানের চার ফুটবলারকে ফাঁকি দিয়ে দারুণ ফিনিশিংয়ে টুর্নামেন্টে নিজের পঞ্চম গোল আদায় করে নেন বাংলাদেশি ফরোয়ার্ড। পাঁচ গোলে ফাইনালের আগে সর্বোচ্চ গোলদাতা এখন সুরভী। প্রথম ম্যাচে নেপালের বিপক্ষেও জোড়া গোল ছিল তার। গোল ছিল ভারতের বিপক্ষেও। এই ম্যাচে হ্যাটট্রিকও পেতে পারতেন প্রীতি, কিন্তু অতিরিক্ত সময়ে তার শট ঠেকান গোলরক্ষক। প্রীতির আর হ্যাটট্রিক হয়নি, ব্যবধানটা আরেকটু বড় হয়নি বাংলাদেশের।