মেহেদী হাসান মিরাজকে ছক্কা মারতে গিয়ে লং অনে খালেদ আহমেদের হাতে আকাশ দীপ ক্যাচ দিতেই ইনিংস ঘোষণা করেছেন ভারতের অধিনায়ক রোহিত শর্মা।
ভারতের স্কোর তখন ৩৪.৪ ওভারে ২৮৫/৯। তাতে প্রথম ইনিংসে ৫২ রানের লিড পায় ভারত। দলটির ইনিংসে ৫১ বলে সর্বোচ্চ ৭২ রান করেছেন ওপেনার যশস্বী জয়সোয়াল। এ ছাড়া ৪৩ বলে ৬৮ রান করেছেন লোকেশ রাহুল।
বাংলাদেশের দুই স্পিনার সাকিব আল হাসান ও মেহেদী হাসান মিরাজ নিয়েছেন ৪টি করে উইকেট। অন্য উইকেটটি নিয়েছেন পেসার হাসান মাহমুদ।
বৃষ্টি-বিঘ্নিত টেস্ট ম্যাচে ফলাফল বের করে আনার তাগিদে শুরু থেকেই মারমুখি ছিল ভারত। বৃষ্টিতে প্রায় আড়াইদিন নষ্ট হলেও কানপুরে ফলাফল বের করতে মরিয়া তারা। সে কারণেই কিনা রোহিত শর্মা ও যশস্বী জয়সাওয়াল মিলে শুরু করলেন টি-টোয়েন্টি মেজাজের ব্যাটিং। আর তাতে চা বিরতির আগে ১৬ ওভারে ভারত তুলেছে ২ উইকেট হারিয়ে ১৩৮ রান।
বাংলাদেশকে ২৩৩ রানে অলআউট করে ব্যাট করতে নামে ভারত। নেমেই যা করলেন ভারতের ব্যাটাররা তা হয়ত টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটেও বিরল এক দৃশ্য। দুই ওভারে ২৯, তিন ওভার শেষে ৫১। ভারতের ওপেনাররা ব্যাট করতে নেমে মাত্র ৩ ওভারেই জন্ম দিলেন বিশ্বরেকর্ডের। টেস্ট ইতিহাসে সবচেয়ে কম বল খেলে দলীয় অর্ধশত পূরণ করেছে রোহিত-জয়সাওয়াল জুটি।
টেস্ট ক্রিকেটে দ্রুততম দলীয় ফিফটির পাশাপাশি ইংল্যান্ডের বাইরে প্রথম দেশ হিসেবে ৫ ওভারের আগে টেস্টে দলীয় ৫০ রান পূরণ করেছে তারা। দ্রুততম ফিফটির এর আগের রেকর্ড ছিল ইংল্যান্ডের। ৪.২ ওভারে চলতি বছর নটিংহ্যামে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৫০ রান পূরণ করেছিল ইংল্যান্ড।
টেস্ট ক্রিকেটের প্রায় দেড়শ বছরের ইতিহাসটাই কানপুরে নতুন করে লিখেছে ভারত। অবশ্য এরপরই ব্রেকথ্রু পেয়েছে বাংলাদেশ। চতুর্থ ওভার করতে এসে মেহেদী হাসান মিরাজ রোহিত শর্মাকে তুলে নেন। তার ভেতরের দিকে ঢোকা বলে বোল্ড হলেন রোহিত।
এর আগে রোহিত গড়েন আরও এক বিশ্বরেকর্ড। লজ্জার খাতায় নাম লেখান বাংলাদেশের পেসার খালেদ আহমেদ। টেস্ট ক্রিকেটে মাত্র চতুর্থ ব্যাটার হিসেবে টেস্ট ইনিংসের প্রথম দুই বলেই ছক্কা হাঁকিয়েছেন রোহিত শর্মা। এর আগে ১৯৪৮ সালে জিম লেকারের দুই বলে ছক্কা হাঁকিয়েছিলেন ফোফি উইলিয়ামস।
এরপর ২০১৩ সালে ন্যাথান লায়নের বলে শচীন টেন্ডুলকার, ২০১৩ সালে জর্জ লিন্ডের বলে ভারতের উমেশ যাদব একই কাজ করেছিলেন। ২০২৪ সালে এসে খালেদ আহমেদের বলে ইনিংসের সূচনাতেই দুই বলে দুই ছক্কা হাঁকালেন রোহিত শর্মা।
আগ্রাসী ব্যাটিংয়ের সুবাদে মাত্র ১০.১ ওভারে দলীয় শতরান পূরণ করে ভারত। এখানেও আছে রেকর্ড। টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে দলীয়ভাবে সবচেয়ে দ্রুতগতির শতরানের কীর্তি এটি। এর আগের রেকর্ডও অবশ্য ভারতেরই ছিল। সেবারও ওপেনার ছিলেন রোহিত-জয়সাওয়াল। ২০২৩ সালে পোর্ট অব স্পেনে ১২.২ ওভারে দলীয় শতরান পূরণ করেছিল ভারত।
এদিকে, টেস্টে দ্রুততম দলীয় শতরান হজমকারী ফিল্ডিং টিম হিসেবেও তৃতীয় স্থানে আছে বাংলাদেশের নাম। ২০০১ সালে কলম্বো টেস্টে মারভান আতাপাত্তু এবং সনাৎ জয়সুরিয়া মাত্র ১৩.২ বলে দলীয় ১০০ রান পূর্ণ করেন।
রোহিত ফিরে গেলেও শুভমান গিলকে নিয়ে রানের চাকা সচল রেখেছিলেন জয়সাওয়াল। ৩১ বলে তুলে নেন ফিফটি। এটি ভারতের হয়ে চতুর্থ দ্রুততম টেস্ট ফিফটি। দেশটির ইতিহাসে মাত্র ২৮ বলে ফিফটি করার নজির আছে ঋষাভ পান্তের। ৩০ বলে ফিফটি করার কীর্তি আছে কপিল দেব ও শার্দুল ঠাকুরের। চতুর্থ স্থানটা কানপুরে আজ নিজের করে নিয়েছেন জয়সাওয়াল।