Sunday, April 20, 2025

সর্বশেষ

সৌম্যের বড় শতকেও নিউজিল্যান্ডে শিঁকে ছিড়ল না বাংলাদেশের

নিউজিল্যান্ডের মাটিতে তাদের বিরুদ্ধে রঙিন পোশাকে কখনোই জেতা হয়নি বাংলাদেশের। তবে এবার ইতিহাস বদলানোর প্রত্যয় ছিল অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর কণ্ঠে। সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে কিছুটা সুযোগও এসেছিল। তবে কাজে লাগাতে পারেনি বাংলাদেশ দল।

বুধবার (২০ ডিসেম্বর) নেলসনে স্বগাতিকদের বিপক্ষে ২৯১ রানের প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ স্কোর গড়েও সাত উইকেটের বড় ব্যবধানে হেরেছে বাংলাদেশ। তবে দল হারলেও ম্যাচসেরা হয়েছেন সৌম্য সরকার।

রানা তাড়ায় নিউজিল্যান্ডের টপ অর্ডার ব্যাটাররা সাবলীল ব্যাটিংয়ে দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন। রাচিন রবীন্দ্র ও উইল ইয়াং স্বাগতিকদের দারুণ শুরু এনে দেন। রাচিন বিদায় নিলেও হেনরি নিকোলস ও ইয়াংয়ের ব্যাটে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নেয় নিউজিল্যান্ড। দুজনেই সেঞ্চুরি করার সুযোগ ছিল, কিন্তু দুর্ভাগ্য যে অল্পের জন্য ব্যর্থ হন তারা। তবুও এই তিন ব্যাটারের ব্যাটে চড়ে ৭ উইকেটে জিতে গেছে স্বাগতিকরা। ৪৬.২ ওভারে ৩ উইকেটে ২৯৬ রান করে তারা। বাংলাদেশের হয়ে হাসান মাহমুদ নিয়েছেন দুই উইকেট। আরেকটি উইকেট নিয়েছেন শরীফুল।

এই জয়ে তিন ম্যাচের সিরিজ ২-০ তে জিতে নিল নিউজিল্যান্ড। আগামী ২৩ ডিসেম্বর হোয়াইটওয়াশ এড়ানোর লক্ষ্যে খেলবে বাংলাদেশ।

এদিন দলের হয়ে ১৬৯ রান করেন ওপেনার সৌম্য। দেশের ক্রিকেটে ওয়ানডে ইতিহাসে যা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে লিটন দাসের ১৭৬ রানের ইনিংসটি রয়েছে এক নম্বরে। তবে একটি জায়গায় সৌম্য লিটনকে ছাড়িয়ে গেছেন। লিটনের ইনিংসটি ছিল ঘরের মাঠে। আর সৌম্য সরকারের ইনিংসটি দেশের বাইরে। অর্থাৎ দেশের বাইরে ওয়ানডে ক্রিকেটে যেকেনো বাংলাদেশি ব্যাটারের সর্বোচ্চ রানের ইনিংসটি এখন সৌম্যর দখলে। একইসঙ্গে শচীন টেন্ডুলকারকে ছাড়িয়ে নিউজিল্যান্ডের মাটিতে এশিয়ার কোনো ব্যাটসম্যানের সর্বোচ্চ ইনিংসটিও নিয়েছেন নিজের দখলে।

সৌম্য ওয়ানডেতে নিজের তৃতীয় শতক পূর্ণ করেন অশোকের বলে অফ সাইডে সিঙ্গেল নিয়ে, ১১৬ বলে। এরপর গতি বাড়ান। শতকের পর ১৫০ রানে যেতে তার লাগে আর মাত্র ২৮ বল। শেষ ওভারে যখন আউট হন তখন সৌম্যর রান ১৫১ বলে ১৬৯।

সবমিলিয়ে দীর্ঘ ৫ বছর পর সেঞ্চুরির দেখা পেলেন সৌম্য সরকার। সবশেষ ২০১৮ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছিলেন এই টাইগার ক্রিকেটার। ফিফটি পেয়েছিলেন শেষ ২০১৯ সালে।

তবে এমন দিনেও দলীয় রানের বিচারে হইয়ত খানিক অতৃপ্তি থেকেই যাবে বাংলাদেশের। শেষ ওভারে দ্রুত উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ থেমেছে ২৯১ রানে। দ্বিতীয় ইনিংসে ৩০০ রান করতে না পারার আক্ষেপটা রয়ে গেছে। শেষ ওভারে তিন উইকেট হারিয়ে স্কোরবোর্ডে জমা হয়েছে মাত্র দুই রান।

নেলসনের সাক্সটন ওভালে টসে জিতে বাংলাদেশকে আগে ব্যাট করতে পাঠায় নিউজিল্যান্ড। ইনিংসে সাবধানী শুরু করেও নিজের স্কোর দুইয়ের বেশি টানতে পারেননি এনামুল হক বিজয়। দলীয় ১১ রানে বিজয়ের উইকেট হারায় বাংলাদেশ। অ্যাডাম মিলনের লেন্থ বল খেলতে গিয়ে সেকেন্ড স্লিপে ক্যাচ দেন বিজয়। তা সহজেই তালুবন্দি করেন সেখানে থাকা কিউই অধিনায়ক টম লাথাম।

বড় স্কোর করা হয়নি অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তরও। ব্যক্তিগত ৬ রানে আউট হন টাইগার অধিনায়ক। জ্যাকব ডাফির দিনের প্রথম শিকার তিনি। শর্ট লেন্থের বল লেগ সাইডে ফ্লিক করতে চেয়েছিলেন শান্ত। তবে বল কানায় লেগে চলে যায় হেনরি নিকোলসের হাতে।

বিপদটা আরও বাড়িয়েছেন লিটন দাস। বিশ্বকাপের বাজে ফর্মটা এদিন নিউজিল্যান্ডেও টেনে এনেছিলেন তিনি। জ্যাকব ডাফির অফ স্ট্যাম্পের বাইরের বল খেলতে গিয়ে কাভার পয়েন্টে থাকা উইল ইয়ংয়ের হাতে ক্যাচ দেন লিটন। ফেরার আগে মাত্র ৬ রান করে যান। ৪৪ রানে বাংলাদেশের নেই ৩ উইকেট।

এরপর তাওহিদ হৃদয়কে নিয়ে কিছুটা ইনিংস গুছিয়েছেন সৌম্য। তবে, দুর্ভাগ্যজনক এক রানআউটে থামতে হয় হৃদয়কে। বোলার পায়ে লেগে বল আঘাত হানে উইকেটে। নন-স্ট্রাইকে থাকা হৃদয়ের কিছুই করার ছিল না। দলের স্কোর তখন ৮০ রানে ৪ উইকেট। মুশফিকুর রহিম ক্রিজে এসে সৌম্যকে সঙ্গ দিয়েছেন অনেকটা সময়। দেখেশুনে খেলে নিজের আর দলের স্কোর বাড়িয়েছেন।

৩৫তম ওভারের পঞ্চম বলে দলীয় ১৭১ রানে আউট হন মুশফিক। জ্যাকব ডাফির অফ স্ট্যাম্পের বাইরের বল খেলতে গেলে এজড হয়ে উইকেটরক্ষক টম ব্লান্ডেলের হাতে চলে যান। তা তালুবন্দি করতে ভুল করেননি ব্লান্ডেলের। ব্যক্তিগত ইনিংসে ৪৫ রান করে সাজঘরের পথ ধরেন তিনি। ডাফির তৃতীয় শিকার হয়ে তাকেও ফিরতে হয় বড় স্কোর করার আগে।

মুশফিকের সঙ্গে ৯১ রানের জুটিতে থাকা অবস্থাতেই নিজের অর্ধশতকের দেখা পেয়েছেন সৌম্য। এরপর মিরাজকে নিয়ে গড়েছেন ৬১ রানের জুটি। ব্যক্তিগত ১১৬ বলে তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগার স্পর্শ করেন তিনি। এরপরের গল্পটা বলতে গেলে কেবল সৌম্যর একার। মাঝে মিরাজের ১৯ আর তানজিম সাকিবের ১৩ রানের ক্যামিও তাকে সঙ্গ দিয়েছে। মিরাজের পর জুনিয়র সাকিবের সঙ্গে তার জুটি ৪০ রানের।

তানজিম সাকিবের পরেই এসেছিলেন রিশাদ। নিজের অভিষেকে প্রথম বলেই ছয় মেরেছেন। যদিও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বর্ণিল শুরুটা আর বড় করা হয়নি। আর শেষ ওভারে তিন উইকেট হারিয়ে ২৯১ রানেই থামতে হয়েছে বাংলাদেশকে।

সর্বশেষ

নির্বাচিত

Stay in touch

To be updated with all the latest news, offers and special announcements.